কাঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুট

মোনাসিফ ফরাজী সজীব, মাদারীপুর, প্রতিনিধি :: মাদারীপুর শিবচরের কাঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ঘাট থেকে বা ঘাটের একটু দুর হতে কিংবা কখনও মাঝ পদ্মা থেকে লঞ্চের যাত্রীরা উঠছে স্পিডবোটে। স্বল্প খরচে ও অল্প সময়ে পদ্মা নদী পাড়ি দেবার সুযোগ হাতছাড়া করতেও রাজি নন অনেক যাত্রীরা। আর তাই প্রতিদিনই কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে দেখা যায় ঝুঁকি নিয়ে স্পিডবোটে উঠার এই চিত্র।

খোজ নিয়ে দেখা যায়, ঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে একটু দূরে গেলেই এই সকল স্পিডবোট ঐ লঞ্চের পেছনে এসে স্বল্প ভাড়ায় যাত্রীদের হাকঁডাক শুরু করে। এতে অনেক যাত্রীই নদীর মধ্য থেকে ঝুঁকি নিয়ে এ সকল স্পিডবোটে উঠতে দেখা গেছে।

বিআইডব্লিউটিসি’র কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্র জানায়, কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে ৮৭টি লঞ্চ, ১৭টি ফেরি ও ২ শতাধিক স্পিডবোট নিয়মিত চলাচল করে। এর মধ্যে স্বল্প সময়ে পদ্মানদী পাড় হওয়ার মাধ্যম হিসেবে স্পিডবোট যাত্রীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হিসেবে নৌযানে পরিণত হয়েছে।

এ দিকে ট্রিপ না থাকলে এক শ্রেণির স্পিডবোট চালক মাঝ পদ্মায় বা ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চ থেকে যাত্রী তুলে পারাপার করে আসছে। সেক্ষেত্রে ভাড়া তুলনামূলক কম হওয়ায় অনেক যাত্রীরাই লঞ্চের পেছন থেকে ঝুঁকি নিয়ে উঠছেন এই সকল স্পিডবোটে।

স্পিডবোটে উঠতে যাওয়া এমনই এক যাত্রী জানান, ‘প্রায় সময়ই নদীর মধ্য থেকে স্পিডবোটে উঠে পারাপার হই। এতে করে ভাড়া কম লাগে, আবার তারাতারি পার হওয়া যায়। তবে নদীর মধ্য থেকে স্পিডবোটে উঠা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ।’

নদীর মধ্য থেকে এভাবে স্পিডবোটে উঠার বিরোধিতা করে অপর এক লঞ্চ যাত্রী মো. আসলাম বলেন, ‘আসলে যাত্রীদের খামখেয়ালীপনা রয়েছে। ঝুঁকি জেনেও নদীর মাঝ থেকে এভাবে স্পিডবোটে করে অনেককেই পাড় হতে দেখছি। কিন্তু কোন ভাবে পা পিছলে যদি পরে যায় সেক্ষেত্রে বড় ধরণের দূর্ঘটনাও ঘটতে পারে। আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্পিডবোট চালক বলেন, ‘অনেক সময় শিমুলিয়া থেকে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে যাত্রী নিয়ে আসার পর কাঁঠালবাড়ী ঘাটে কোন ট্রিপ থাকে না। সেক্ষেত্রে খালি বোট নিয়ে ফিরে যেতে হয়। তেলের খরচ উঠানোর জন্য মাঝে মধ্যে লঞ্চ থেকে কম টাকায় যাত্রী তুলি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ’র কাঁঠালবাড়ী ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, ‘নদীর মধ্য থেকে যাত্রী তুললে আসলে আমাদের কিছু করার থাকে না। বিষয়টি পুলিশকেও আমরা জানিয়েছি। আর লঞ্চের যাত্রীদের এ বিষয়ে সচেতন করার কাজও আমাদের চলছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এভাবে লঞ্চ থেকে যাত্রী তোলা সম্পূর্ণ নিষেধ। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি এটা বন্ধ করতে। তবে স্পিডবোট কর্তৃপক্ষের এভাবে লঞ্চ থেকে যাত্রী উঠানো বন্ধে ভূমিকা রাখতে হবে’।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইমরান আহমেদ বলেন, ‘ঘাটের কাছাকাছি থেকে যাত্রী তুললে আমরা পাবলিক বোট নিয়ে গিয়েও তাদের ধরেছি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের শাস্তিও দিয়েছি। নদীর মধ্য থেকে যাত্রী তুললে আমরা অসহায়। তবে নৌ পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’

 

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here