'ভারতী ঘোষ'ডেস্ক নিউজ :: ভারতজুড়ে এখন সবচেয়ে যে নামটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সেটি হলো ‘ভারতী ঘোষ’। পশ্চিমবঙ্গের আইপএস পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন এই নারী। গত ২৬ ডিসেম্বর হঠাৎ তার পদাবনতি ঘটিয়ে বদলি করা হয় উত্তর২৪পরগনা পুলিশের তৃতীয় ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার পদে। তবে কর্তৃপক্ষের এ আদেশ তোয়াক্কা করেননি তিনি। প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।

ভারতী ঘোষ একটানা ছয় বছরের বেশি সময় দায়িত্বপালন করেছেন পশ্চিমবঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত কাছের লোক ছিলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মা’ বলেও ডাকতেন। সরকারি পদে থেকেও তিনি তৃণমূলের অপ্রকাশ্যের এক নেত্রী হয়ে ওঠেন। দলকে গোছানো, দলকে বাড়ানো, দল ভাঙা, কাউকে দলে আনা—এসবের দায়িত্বপালন করেছেন তিনি।

মমতার দলের সেই সময়কার দ্বিতীয় শক্তিশালী নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গেও ছিল ভারতী ঘোষের সুসম্পর্ক। কিন্তু মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদানের পরও ভারতী ঘোষ তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন। এতে ক্ষিপ্ত হয় মমতা ও এক প্রভাবশালী মন্ত্রী। ভারতী ঘোষের সঙ্গে ঠাণ্ডাযুদ্ধ শুরু হয়।

ফলে ভারতী ঘোষকে নাস্তানাবুদ করার জন্য মামলা হয়। মামলা করেন পশ্চিম মেদিনীপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী চন্দন মাজি। চন্দন মাজি অভিযোগ করেন, ভারতী ঘোষ হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করতেন। টাকা ও স্বর্ণ আদায় করা ছিল তার লক্ষ্য। এই অভিযোগ নিয়ে শুরু হয় তদন্ত। কলকাতার সিআইডি পুলিশও বসে নেই। ভারতী ঘোষের অবৈধ সম্পত্তির খোঁজে নেমে পড়ে তারাও।

৫ ফেব্রুয়ারি তল্লাশি চালানো হয় কলকাতার আনন্দপুরে ভারতী ঘোষের তিনটি বাড়িতে। একটি মামলা চলামন রয়েছে ভারতীর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে বুধবার উত্তর২৪পরগনার স্বরূপনগরের ব্যবসায়ী ইউনুস আলী মণ্ডল করেন ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের আরেকটি মামলা।

অভিযোগ রয়েছে, ২০১৬ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় ইউনুস গুরুতর আহত হন। তখন ওই গাড়িতে থাকা তার ৪৫ লাখ রুপি হাওয়া করে দেন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ ও তার সাঙ্গপাঙ্গ পুলিশের সদস্যরা।

এদিকে ভারতী ঘোষকে বিজেপিতে নেয়ার জন্য তৎপরতা শুরু করেছে বিজেপি নেতারা। সংবাদমাধ্যমের খবর, ইতিমধ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয় বর্গীয় এবং রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন ভারতী ঘোষ। দিলীপ ঘোষ বলেছেন, যে কেউ বিজেপির আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে দলে আসতে পারেন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরাও মনে করছেন, যেভাবে ভারতী ঘোষের ওপর রাজ্য সরকারের তরফে চাপ বাড়ছে। সে ক্ষেত্রে ভারতী ঘোষকে এই চাপ থেকে বাঁচতে তাকে একটি দলে যোগ দিতে বাধ্য করা হতে পারে। আর এ ক্ষেত্রে বিজেপি ছাড়া ভারতী ঘোষের দ্বিতীয় পথ খোলা নেই।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here