স্টাফ রিপোর্টার :: ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের‏ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনে সোমবার দিবাগত রাতে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

সোমবার দিবাগত রাত ২টা ৪৮মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী তূর্ণা নিশিথা ও সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হতাহতরা সবাই উদয়ন ট্রেনের যাত্রী।

নিহতদের মধ্যে ১৫ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন- চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম রাজারগাঁওয়ের আবদুল জলিলের ছেলে মজিবুর রহমান (৫৫), হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ ঈশানপুরের মঈন উদ্দিনের স্ত্রী কাকলী (২০), ঈশানপুরের জাহাঙ্গীরের মেয়ে মরিয়ম বেগম (৬), হাজিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমরাজারগাঁওয়ের মজিবুর রহমানের স্ত্রী কুলসুম বেগম (৩০), উত্তর বালিয়ার বিল্লাল মিয়াজির মেয়ে ফারজানা (১৫), হবিগঞ্জের বাহুলার ইয়াছিন আরাফাত (১২), সৈয়দাবাদের আজমতউল্লাহের ছেলে মো. রিপন মিয়া (২৫), চুনারুঘাটের তীরগাঁওয়ের মৃত আবদুল হাশিমের ছেলে সুজন আহমেদ (২৪), বানিয়াচং উপজেলার মদনমূরকের আইয়ুব হোসেনের ছেলে আল আমীন (৩০), আনোয়ারপুরের আলী মো. ইউসুফ (৩২), চুনারুঘাটের আহমদাবাদের আবদুস সালামের স্ত্রী পিয়ারা বেগম, বানিয়াচং উপজেলার বড়বাজারের সোহেলের মেয়ে আদিবা (২), মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের মুসলেম মিয়ার স্ত্রী জাহেদা খাতুন (৪৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সোহেল রানার মেয়ে সোহামনি (৩), নোয়াখালীর মাইজদীর শংকর হরিজনের ছেলে রবী হরিজন (২৩)।

রেলওয়ে স্টেশন, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃগর ট্রেন ঢাকাগামী তূর্ণা নিশিতা রাত ২টা ৪৮ মিনিটে শশীদল রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের দিকে রওনা করে। মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার স্টেশনে প্রবেশের আগেই আউটারে থামার জন্য লালবাতি জ্বালিয়ে সংকেত দেয়। অপরদিকে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস কসবা রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশ পথে স্টেশন মাস্টার তাকে মেইন লাইন ছেড়ে দিয়ে ১ নম্বর লাইনে আসার সংকেত দেয়। ওই ট্রেনের চালক ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করার সময় ছয়টি বগি প্রধান লাইনে থাকতেই অপর দিক থেকে আসা তূর্ণা নিশিতা ট্রেনের চালক সিগনাল (সংকেত) অমান্য করে দ্রুত গতিতে ট্রেন চালায়। এ সময় উদয়ন ট্রেনের মাঝামাঝি তিনটি বগির সাথে তূর্ণা নিশিতার ইঞ্জিনের সংঘর্ষ হয়। এতে উদয়ন ট্রেনের তিনটি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়।  উদয়ন ট্রেনের ১৬ জন যাত্রী মারা যান এবং শতাধিক নারী পুরুষ যাত্রী আহত হয়েছেন।

মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. জাকের হোসেন চৌধুরী বলেন, নিশিতা ট্রেনটি আউটারে মেইন লাইনে থামার সংকেত দেয়া হয়েছিল। উদয়ন ট্রেনটিকে মেইন লাইন থেকে ১ নং লাইনে আসার সংকেত দেয়া হয়েছিল। সেই হিসেবে উদয়ন ট্রেন ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করছিল। এ সময় নিশিতা ট্রেনের চালক সংকেত অমান্য করে উদয়ন ট্রেনের ওপর উঠে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here