জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও এমন সন্দেহজনক রোগীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য লক্ষ্মীপুরে ১০০টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত এ জেলায় এমন কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালে বেড প্রস’তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গাফফার।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কিংবা সন্দেহজনক রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ডের অধীনে ১০০ শয্যা প্রস’ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর হাসপাতালে ৪০ বেড, রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ বেড, রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ বেড ও কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ বেড প্রস’ত রাখা হয়েছে। এই বেড গুলো করোনা আক্রান্ত কিংবা সন্দেহজনক রোগীদের জন্যই সংরক্ষণ থাকবে। এই রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের সকল চিকিৎসকই দায়িত্ব পালন করবেন।

জেলার কোথাও কোনো মানুষের শরীরে এ ভাইরাসের লক্ষন দেখা দিলে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়, সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এছাড়া এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০০১১ ও ০১৯২৭৭১১৭৮৪ নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য প্রচার করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আনোয়ার হোসেন জানান, সদর হাসপাতালে ৪০টি বেড প্রস’ত রাখা হয়েছে। অন্য রোগীদের থেকে করোনা আক্রান্তদের সম্পূর্ণ আলাদা রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত জেলার কোথাও কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি।

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গাফফার জানান, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও সন্দেহভাজনদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে সকল চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করবেন। এ জন্য আলাদা করে কোনো টিম করা হয়নি। আক্রান্তদের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুলোতে ১০০টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে জনগণকে সচেতনতা অবলম্বন করতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

এছাড়া জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট হলে সাথে সাথে ঘরে ও বাইরে সব সময় এসব রোগীকে মাক্স পরিধান করতে হবে। পরিবারে থেকে তাকে একটু আলাদা করে রাখতে হবে, যাতে তার থেকে নতুন করে কেউ আর আক্রান্ত না হয়। রোগীকে অবশ্যই মাক্স পড়িয়ে চিকিৎসার জন্য রেজিষ্টার্ড ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যাক্তির হাঁছি, কাশি, শ্বাস, প্রশ্বাসের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে হ্যান্ডশেক ও কোলাকোলি করা যাবেনা। প্রত্যেক ব্যক্তি সচেতনতার জন্য মাক্স পড়তে পারেন। প্রতিদিন যতবার সম্ভব হাত ভাল করে সাবান দিয়ে ধৌত করতে হবে। অসুস’ পশু, পাখি হাতে স্পর্শ না করার নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।

এদিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে করোনা ভাইরাস নিয়ে সচেতনতা মূলক জরুরি সভা করা হয়েছে। সভায় জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পালসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল আতঙ্কিত না হয়ে সকলকে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান।

এছাড়া বিদেশ থেকে জেলার কেউ দেশে আসলেই সর্বপ্রথম সরকারি হাসপাতাল গুলোতে যোগাযোগ করার আহ্বান জানান তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here