ডেস্ক নিউজ :: করোনা ভাইরাসে নিউইয়র্কে জীবন দিলেন বাঙালিনী আমিনা ইন্দালিব তৃষা। মৃত্যুর তিনদিন পর সম্পূর্ণ যান্ত্রিক পদ্ধতিতে সম্পন্ন হলো দাফন-কাফন। ক্রেন দিয়ে কবরে নামানো হলো তরুণীর পবিত্র মরদেহ।তিনটি শিশু সন্তানের দুটি মেয়ে একটি ছেলে। কনিষ্ঠ কন্যাটির বয়েস মাত্র ১৪ মাস। নিউইয়র্কে তৃষার প্রবাসজীবন মাত্র চার বছরের। তার করুন মৃত্যুর পর সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে অনেকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তার কয়েকটি হুবহু তুলে ধরা হলো- 

 

সাংবাদিক নাসিমা আক্তার সোমা- মুন্সিগঞ্জের মেয়ের মর্মান্তিক বিদায়: ক্রেনের মাধ্যমে কবরস্থ করা হলো সুদর্শনা আমিনা তৃষাকে। ইনোসেন্ট চেহারার এই বাঙালি নারী কি কখনো ভেবেছিলেন– যান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাঁর দাফন-কাফন সম্পন্ন হবে; শেষ বারের মতো দেখতে আসবে না কোন স্বজন-পরিজন; ভাগ্যে জুটবে না শেষ বিদায়ের সম্মানটুকু; আহা! ফুটফুটে তিনটি অবুঝ সন্তান রেখে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন গুণবতী ও রুপবতী এই নারী। ছবিতে দৃশ্যমান রমণী ও তার সন্তানগুলো দেখলে বড্ড বেশি কষ্ট লাগে।

স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে নিউইয়র্কে জ্যামাইকার হাইল্যান্ড অ্যাভিনিউয়ে বাস করতেন তৃষা। তাঁর পুরো নাম আমিনা ইন্দালিব তৃষা। স্বামী বোরহান হাওলাদার। এই দম্পতির রয়েছে দু’টি মেয়ে ও একটি ছেলে। কনিষ্ঠ কন্যাটির বয়স মাত্র ১৪ মাস। এই দুধের শিশুকে এখন দেখবে কে? নিউইয়র্ক সিটির পুলিশ বিভাগ সরকারিভাবে বাচ্চাটিকে লালন-পালনে আগ্রহী। ১৯৮২ সালে জন্ম নেওয়া এই বাঙালিনী ‍বাংলার আলো-বাতাসেই বেড়ে ‍উঠেছিলেন। নিউইয়র্কে তৃষার প্রবাসজীবন মাত্র চার বছরের। তাঁর বাবার নাম মনির হোসেন হাওলাদার। পৈতৃক নিবাস মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার মধ্যপাড়া-তেলিপাড়ায়।

মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন আমিনা তৃষা। জ্বর ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে জ্যামাইকা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। মেডিকেল টেস্টের পর জানা গেলো, তিনি কোভিড-১৯ এ আকান্ত্র হয়েছেন। এই হাসপাতালে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধিন থাকাবস্থায় ২৩ মার্চ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন আমিনা তৃষা। তিনদিন পর তাঁকে কবরস্থ করা হয় লং আইল্যান্ডে। ক্রেন দিয়ে কবরে নামানো হলো ৩৮ বছর বয়সী এই নারীর লাশ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া কারো লাশ দাফন করা হয় এভাবেই। হাত দিয়ে লাশ কবরে নামানোর সুযোগ নেই। সংক্রমণ হওয়ার ভয়ে। ফলে কফিনে ভরা লাশ ক্রেন দিয়ে নামানো হয় কবরে এবং ক্রেন দিয়েই কবরের মাটি দেওয়া হয়। আমিনা তৃষার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে মনটা কেঁদে ওঠে। তাঁর জন্য জান্নাত কামনা করছি।

 

সাবাদিক মো. সাইফুল জিহাদ- ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস…কোলের বাচ্চার বয়স মাত্র ১৪ মাস। ২৩ মার্চ তিন সন্তানকে রেখে বাংলাদেশী কন্যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী আমিনা ইন্দ্রালিব তৃষা (৩৯) চলে গেলেন করোনার নিষ্ঠুর থাবায়।

 

জাহিদ বিন আজিজ- কি নির্মম নিয়তি! কোলের বাচ্চার বয়স মাত্র ১৪ মাস। ২৩ মার্চ তিন সন্তানকে রেখে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আমিনা ইন্দ্রালিব তৃষা (৩৯) চলে গেলেন করোনার নিষ্ঠুর থাবায়। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে মরহুমার আত্মার শান্তি কামনা করছি। আল্লাহ ওনাকে বেহেশতবাসী করুন। আমিন।। আল্লাহ সবাইকে রক্ষা করুক এমন অসহনীয় পরিস্থিতি থেকে।।

 

মাকসুদা সুলতানা ঐক্য- মৃত্যু কতোটা নির্মম হলে-মৃত দেহেটাকে বাবা মা ভাই বোন সন্তান বা আত্মীয় স্বজন শেষ বারের মতো ছুঁয়ে দেখতে পারেনা ! সন্তান জড়িয়ে ধরে শেষ চুমুটা আঁকতে পারে না জন্মদাত্রী মা অথবা জন্মদাতা বাবার কপালে! স্বামী ছুঁতে পারেনা তার প্রিয়তমা স্ত্রী কে! মা জড়িয়ে কাঁদতে পারেনা তার নাড়ি ছেঁড়া প্রিয় সন্তানটিকে!

এমন কি শেষ গোছলের পর আতর গোলাপ সূরমায় শেষ বারের মতো সাজিয়ে নতুন সাদা কাপড়ে জড়াতেও পারেনা!

সেই নির্মম মৃত্যু শহীদি মরণ হয় কিনা সেটা আল্লাহই ভালো জানেন। আমরা সাধারণ মানুষ জানি বড় নির্মম আর লানতের মৃত্যু। পৃথিবীতে এমন লানতের মৃত্যু যে শুধু পাপীদের ই হয় তা কিন্তু কখনোই নয়।

পৃথিবীতে যখন মহামারী হয় তখন অনেক পূর্ণাত্মাও সেই মহামারীর শীকার হয়ে বিলীন হয় নগরের পাপীতাপীদের সাথে, এবং এটা সৃষ্টির আদী থেকেই হয়ে আসছে।

তবে এই করোনার মতো ছোঁয়াচে জঘন্য মহামারীতে মারা যাওয়া শরীরটি যখন সকল বাঁধা অতিক্রম করে যথাসম্ভব নিজস্ব ধর্মীয় আচার আচরণ মেনে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়, তখন ঐ টুকুতেই আমরা নিজেদের মন কে শান্তনা দেই এই ভেবে যে,যাক নাপাক শরীরে তো তাকে কবরে নামানো হয় নি বা শেষ গোছল টুকু তো অন্তত হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। সত্যিটা হলো মহান আল্লাহর কাছে আমরা মানুষ বড় অসহায় হয়েই শুকরিয়া করার ভান করি মাত্র।

আমাদের বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধার কন্যা আমিনা ইন্দালিফ তৃষা এমেরিকার নিউইয়র্ক এর বসবাসকারী প্রথম বাঙালী মুসলিম নারী যিনি দু’দিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে আল্লাহর কাছে ফিরে গেছে।

আজ তার মৃতদেহ যথাসম্ভব ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে পবিত্র ভাবে প্রস্তুত করানো হয়েছে,তবে এই ছোঁয়াচ মহামারী আর এমেরিকান নিয়ম অনুযায়ী তাকে বাক্স বন্দী করে ক্রেনের সাহায্যে দাফনকর্ম সম্পন্ন করা হয়েছে।

আল্লাহ মরহুমার আত্মার শান্তি দাও এই চাওয়া আমাদের। এবং এই জঘন্য লানতের মৃত্যু যেন আমাদের আর দেখতে না হয়। আল্লাহ তুমি তোমার সেই অসীম রহমত ও করুনা করো সারা পৃথিবীর আশরাফুল মাখলুকাতের জন্য…ক্ষমা করে দাও আমাদেরকে আমীন।

 

হেলেনা জাহাঙ্গীর- মুন্সীগঞ্জ জেলা সিরাজদিখান উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা মনির হাওলাদারের মেয়ে আমেরিকায় #করোনায় মারা গেছেন — আমেরিকার সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে ও ব্যর্থ হয়েছে –
এমন মৃত্যুগুলো চোখের কোনায় পানি আনে খুব সহজে–
নিউইয়র্ক প্রবাসী তৃষা নামের এই বাংলাদেশী বোনটি ১৪ মাসের একটি শিশু সন্তানসহ ৩ টি সন্তান রেখে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সম্পূর্ন যান্ত্রিক সহায়তায় যার দাফন করা হয়।
জানিনা আল্লাহ আমাদের কার কপালে কি রেখেছেন আল্লাহপাক ।। প্রিয় দেশবাসী” আপনারা সরকারের সর্বোচ্চ নীতি নিয়ম পালন করে পরিবার কে সুরক্ষা রাখুন,আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে হেদায়েত দান করুন আমীন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here