সাউথ এশিয়ান এন্টারন্যাশনাল লিঃ-এর মালিকানাধীন কমলগঞ্জের নন্দরানী চা বাগান দখল করাকে কেন্দ্র করে শুক্রবারের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বিকালে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার হারুন অর-রশীদ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান।

শুক্রবার রাত ১০টায় চা বাগান বাংলো এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।

কমলগঞ্জের ইউএনও প্রকাশ কান্তি চৌধুরী শনিবার জানান,পরবর্তী নিদের্শ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে। সকালে পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মকবুল হোসেন ভূঁইয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তাহার সাথে পুলিশ সুপার হারুন অর-রশিদসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কমলগঞ্জ থানার ওসি অমূল্য কুমার চৌধুরী ছিলেন। পুলিশ এ ঘটনায় সাধারন ডায়রি করে সকালে লাশ গুলোর পুলিশ ময়না তদন্তে মৌলভীবাজার মর্গে পাঠায়। ময়না তদনত্ম শেষে বিকালে পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশ দুটি হস্থান্তর করে পুলিশ।

এ দিকে সিলেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুলবিদ্ধ ৪ জনকে শনিবার আটক করে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ। আটককৃতরা হলেন আলকাছ মিয়া,আফই ও ইউসুফ মিয়া। তারা বর্তমানে কমলগঞ্জ থানা পুলিশের পাহারায় চিকিৎসাধীন থাকার কথা বিকালে নিশ্চিত করেন হাসপাতালে অবস্থানরত কমলগঞ্জ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ রাসেল।

সকালে বাগানে গিয়ে দেখা যায়,বাগানের বাংলোয় অবস্থান করছে পুলিশের একটি দল। শুনসান নিরবতার মধ্যে পুরুষ শূণ্য বাগানটিতে মহিলারা আতংকে রয়েছে।

মহিলা চা শ্রমিকরা জানান,হামলাকারীরা যখন বাগানের বাংলোয় হামলা চালায় তখন তারা পালিয়ে গিয়ে পাশের পাহাড়ি এলাকার জঙ্গলে আশ্রয় নেন। হামলাকারীরা বাংলো টিলা অফিস,আশপাশের বাসায় নারকীয় তান্ডব চালিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর ও লুটপাঠ চালায়।

সংঘর্ষ চলাকালে একদল হামলাকারী বিভিন্ন চা শ্রমিকদের ঘরে হামলা ও লুটপাট চালায়। হামলাকারীরা  চা শ্রমিক জগৎ,আফজল,প্রিতবাসীর ঘর ভাংচুর করে ঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ভারতী মাহারা নামে এক মহিলা আহত হন। ভাংচুর করা হয় বাগানের ট্রাক,জীপ। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় গাড়ি।

শ্রমিকরা মাটির ঘরগুলোতে গুলির অসংখ্য চিহৃ দেখিয়ে বলেন বহুলোক গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে তারা দেখেছেন। বাগানে যখন এ সংঘর্ষ চলে তখন কমলগঞ্জ পুলিশ বাগানের প্রধান ফটকে অবস্থান করছিল বলে চা শ্রমিকরা জানান। বাগান দখলের এ হামলায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলি বিনিময় ও ২ জন নিহত হলেও পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে এক রাউন্ড টিয়ার শেলও ব্যবহার করেনি।

এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নন্দরানী চা বাগানের ঘটনায় পুলিশের কোন ব্যর্থতা আছে কি না এবং বাগানে সংঘঠিত সংঘর্ষের ঘটনাটি তদন্তের জন্য মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বিকালে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার হারুন অর-রশীদ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/সোহেল রানা/কমলগঞ্জ

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here