মহানন্দ অধিকারী মিন্টু, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি ::

কপোতাক্ষ নদের ভয়াবহ ভাঙ্গন কবলে খুলনার পাইকগাছায় হিতামপুর মালোপাড়া ২৫ পরিবার। ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি, গাছপালা ও জমি নদগর্ভে বিলীন হচ্ছে। ভাঙ্গন কবলে পড়ে নদ তীরবর্তী মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে দিনপাত করছে। ভাঙ্গনে কয়েকটি ঘরে নিচের অংশে অর্ধেক মাটি নদে ধ্বসে পড়েছে। ঘরগুলি নদের উপর ঝুলছে। যে কোন সময় নদ গর্ভে চলে যাবে। ঐ পরিবারের বসবাসরত মানুষগুলো নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। দ্রুত ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে রাস্তাসহ অবশিষ্ঠ পরিবারের ঘরবাড়ি এবং ফসলী জমি নদের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, একটি মন্দির ও প্রায় ২৫টি পরিবার ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে। বিগত কয়েক বছর ভাঙ্গনের তীব্রতা না থাকলেও গত বছর থেকে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে। ভাঙ্গন কবলিত মালোপাড়ার রঞ্জিত বিশ্বাস, নিমাই বিশ্বাস, প্রভাষ বিশ্বাস, রবিন বিশ্বাস, সুভাষ বিশ্বাস, সাধন বিশ্বাস, বাসুদেব বিশ্বাস, লালু বিশ্বাস, নলিনা বিশ্বাস, ভাদু বিশ্বাস, বিরেন্দ্র বিশ্বাস, সুরঞ্জন বিশ্বাস ও সুশান্ত বিশ্বাস বিশ্বাসদের পরিবার গুলি চরম আতঙ্কে রয়েছে। জোয়ারের পানি বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করছে। আর ভাটার টানে নদের তীর ভেঙ্গে ভাঙ্গনের তীব্রতা বাড়ছে।

বোয়ালিয়া মালোপাড়ার দুর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি লালু বিশ্বাস জানান, বিগত কয়েক বছর নদের টুকিটাকি ভাঙ্গন ছিল। তবে গত বছর থেকে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে আমাদের মন্দির, বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। পাইকগাছায় ভদ্রা তীরবর্তী দেলুটির কালিনগর ও দারুনমল্লিক এবং কপোতাক্ষ তীরবর্তী রাড়ুলী মালোপাড়া, স্টিমার ঘাট, আগড়ঘাটা, সোনাতনকাটি, কপিলমুনি, কাশিমনগরসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙ্গন ও ফাটল শুরু হওয়ায় বসতবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনার পাশাপাশি সর্বস্ব হারানোর শঙ্কা নিয়ে দিন কাটছে নদ তীরবাসীর।

এতে যেকোনো সময় বেড়িবাঁধ নদে বিলীন হয়ে যেতে পারে। বেড়িবাঁধ ভাঙ্গলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে। মালোপাড়ার ভাঙ্গন এলাকায় গত বছর কিছু অংশে বালির বস্তা দেওয়া হয়। ভাঙ্গনে বালির বস্তাগুলি নদে ধসে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড পাইকগাছার সাব-এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রাজু হাওলাদার জানান, হিতামপুর মালোপাড়ার কপোতাক্ষ নদের ভাঙ্গন এলাকার
ডিজাইন ও পরিকল্পনা প্রস্তুত করে নতুন অর্থ বছরে চাহিদাপত্র পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। বরাদ্দ হলে খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here