কক্সবাজার পৌরসভার গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষন প্রকল্পের (টিআর) আওতায় বরাদ্দ হওয়া ১৫টি প্রকল্পের ৩০.৫৪৯ মেট্রিক টন গম এর অধিকাংশই লুটপাট  করে ফেলা হয়েছে। প্রকল্প নিয়েও হয়েছে নয়ছয় অবস্থা। ভূঁয়া প্রকল্প দেখিয়েও তুলে নেয়া হয়েছে সরকারী বরাদ্দের গম।

গত ৩০ জানুয়ারী প্রকল্প গুলোর কাজ সমাপ্তির নির্দেশনা থাকলেও জানুয়ারীর শুরুতেই বরাদ্দকৃত এসব গম পৌরসভার কর্মকর্তা খোরশেদ আলম এর মাধ্যমে ময়দার মিল মালিক বেদার আলম সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। কাজের আগেই এসব গম তুলে নেয়া হলেও প্রকল্পগুলোতে কোন কাজ করা হয়নি।

জানা গেছে, কক্সবাজার পৌরসভায় ১৫টি প্রকল্পে ৩০.৫৪৯ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্প ও প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ হলো যথাক্রমে আবুজর আল গিফারী কেজি স্কুলের রং করা ও কক্ষ মেরামত ২ মেট্রিক টন, কেন্দ্রীয় মহা শশ্মানের পুকুর ঘাট নির্মানে ১.৫০ মেট্রিক টন, বড় বাজার জামে মসজিদের সংস্কার কাজে ১.৫০ মেট্রিক টন, টেকপাড়া ব্যাটমিন্টন ক্লাব মাঠ সংস্কারে ১ মেট্রিক টন, বার্মিজ মার্কেট এনবিসি মাঠ সংস্কার ও ক্রীড়া সরঞ্জাম ক্রয় বাবদ ১ মেট্রিক টন, হাঙ্গরপাড়া ব্যাটমিন্টন মাঠ সংস্কার ও ক্রীড়া সরঞ্জাম ক্রয় ১ মেট্রিক টন, বাঁচা মিয়ার ঘোনায় টিউবয়েল স্থাপন খাতে ৩ মেট্রিক টন, ঘোনারপাড়ায় কৃষ্ননান্দধামের পাশে গাইড ওয়াল নির্মান ৩.৫৪৯ মেট্রিক টন, বাহারছড়া জামে মসজিদের অজুখানা সংস্কার ৩ মেট্রিক টন, দক্ষিণ বাহারছড়া বায়তুশ সালাত মসজিদ সংস্কার ৩ মেট্রিক টন, লাইট হাউস ফাতের ঘোনা জামে মসজিদের সংস্কার ৩ মেট্রিক টন, পৌর কর্মচারী ইউনিয়ন কার্যালয়ের আসবাবপত্র ক্রয় ২ মেট্রিক টন, ফল্লাইন্যাকাটা সোনাবিবির বাড়ি হতে নাগুর বাড়ি পর্যন্ত ড্রেন ও স্ক্যাব নির্মাণ ২ মেট্রিক টন, এসএম পাড়া পশ্চিম মসজিদের মক্তব সংস্কার ১ মেট্রিক টন ও পেশকারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ক্রয় বাবদ ২ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে এসব প্রকল্পের অধিকাংশের মধ্যেই কোন কাজ করা হয়নি। পেশকার পাড়া আবুজর আল গিফারী কেজি স্কুলে রং ও কক্ষ মেরামতের কোন কাজ হয়নি। অথচ বেশ কিছুদিন পূর্বে আরো একবার এ স্কুলের নামে গম বরাদ্দ নেয়া হয়েছিল। তখনও কোন কাজ করা হয়নি।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনছুর আলম নিজের মালিকানাধীন স্কুলের নামে এভাবে গম বরাদ্দ নিয়ে লুটপাট করছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনছুর আলম এর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

একই ভাবে টেকপাড়া ব্যাটমিন্টন ক্লাব মাঠ সংস্কার, বার্মিজ মার্কেট এনবিসি মাঠ সংস্কার ও ক্রীড়া সরঞ্জাম ক্রয়, হাঙ্গরপাড়া ব্যাটমিন্টন মাঠ সংস্কার ও ক্রীড়া সরঞ্জাম ক্রয় বাবদ বরাদ্দকৃত টাকাও লুটপাট করা হয়েছে। সেখানেও কোন কাজ হয়নি। বাঁচা মিয়ার ঘোনায় টিউবয়েল স্থাপন খাতে ৩ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ হলেও টিওবয়েল স্থাপন এখনো হয়নি। তবে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা সিদ্দিকী জামশেদ জানিয়েছেন, টিওবয়েল স্থাপনের জন্য সব সামগ্রী ক্রয় করা হয়েছে। স্থান নির্বাচন করে দ্রুত টিওবয়েল স্থাপন করা হবে। পৌর কর্মচারী ইউনিয়ন কার্যালয়ের আসবাবপত্র ক্রয়ের নামে ২ মেট্রিক টন গম লুটপাট করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসা ও রাসত্মার নামে বরাদ্দ হওয়া গমও লুটপাট করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় মহা শশ্মানের পুকুর ঘাট নির্মান ও বড় বাজার জামে মসজিদের সংস্কারে বরাদ্দ হওয়া ৩ মেট্রিক টন গম এর বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান বলেছেন, বরাদ্দকৃত গম বিক্রি করে পুকুর ঘাট ও মসজিদ সংস্কার কাজে ব্যবহারের জন্য তাদের তহবিলে জমা রাখা হয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভার কর্মচারী খোরশেদ আলম বলেছেন, ইতিপূর্বে কর্মচারী ইউনিয়ন কার্যালয়ের জন্য কিছু আসবাবপত্র ক্রয় করা হয়েছিল। প্রকল্প দেখিয়ে সামান্য গম বিক্রি করে তা সমন্বয় করা হয়েছে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ড টকম/কামাল আজাদ/কক্সবাজার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here