স্টাফ রিপোর্টার :: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস সামছ জগলুল হোসেন বৃহস্পতিবার আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি আদালত মোয়াজ্জেমকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।

আদালত এ রায় ঘোষণা করেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুটি ধারায়। এর মধ্যে ২৬ ধারায় ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ২৯ ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। অর্থাৎ দুটি ধারায় মোট ৮ বছরের কারাদণ্ড এবং ১৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে মোয়াজ্জেমকে।

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত তার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করলে ওসি মোয়াজ্জেম তাকে থানায় ডেকে জবানবন্দি নিয়েছিলেন। ওই জবানবন্দি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এদিকে নুসরাতের মায়ের করা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ গ্রেফতার হয়। এরপর ৬ এপ্রিল নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন দেয় অধ্যক্ষ সিরাজের লোকজন। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত।

১৫ এপ্রিল ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

আদালত মামলাটি তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা মামলাটি তদন্ত করে ২৩ মে আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। ১৭ জুলাই অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে এ মামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।

গত ১২ নভেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। এরপর ১৪ নভেম্বর নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন ওসি মোয়াজ্জেম। গত ২০ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন রায় ঘোষণার জন্য ২৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া কোনো মামলার এটিই প্রথম রায়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here