আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট প্রতিনিধি :: লালমনিরহাটের পাটগ্রামের টেপুগাড়ী বি কে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা গোল্ডকাপ ফুটবল টুনামের্ন্টে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে ট্রফি জিতে নিলেও সেই ট্রফি রাখার ঘর নেই তাদের। ভাঙ্গা ভবনে শত সমস্যা নিয়ে চলছে তাদের শিক্ষা কার্যক্রমসহ একের পর এক সফলতা।
ওই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী দুলালী আক্তার জানান, তাদের বিদ্যালয় ভবনের টিন নষ্ট হওয়ায় বৃষ্টিতে পানি পড়ে, দরজা-জানালা ভাঙ্গা হওয়ায় প্রায় দিন বিস্কুট চুরি হয়। খেলার কোনো মাঠ নেই। তারপরও তারা এগিয়ে যেতে চায়।
৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র মিল্লাত হোসেন জানান, তাদের বিদ্যালয়ে একটি নলকুপ পর্যন্ত নেই। আশে-পাশে কোনো বাড়িও নেই। যে কারণে তাদের বাড়ি থেকে বোতলে পানি নিয়ে আসতে হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় টিন সেট ভবনে গরমে অতিষ্ঠ হতে হয়।
অপর ছাত্রী মনিজা খাতুন জানান, বিদ্যালয়টি পাকা রাস্তা থেকে ভিতরে হওয়ায় বিদ্যালয় যাওয়ার এক মাত্র রাস্তাটি ভেঙ্গে গেছে। বিদ্যালয়ের কোনো খেলার মাঠ নেই। বিদ্যালয়ের ছোট বারান্দায় তাদের খেলা করতে হয়। এ ছাড়া শিক্ষক সংকটের কারণে তাদের পড়াশুনা ভালো ভাবে হয় না।
সহকারী শিক্ষক মশিয়ুর রহমান জানান, ২০১১ সালে শুরু হওয়া খেলায় এ পযর্ন্ত ৬ বারের মধ্যে এ বিদ্যালয় ৩ বার জেলা চ্যাম্পিয়ন, ২ বার বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন ও এবার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। পড়াশুনাতেও আমার এবার সমাপনী পরীক্ষায় উপজেলা পর্যায়ে ২য় স্থান অধিকার করেছি। এছাড়া ৩ শ্রেণীর ছাত্রী তুশা মনি ফুটবল খেলতে দেশের বাইরে যেতে পারেন। আমার ট্রফি ঠিকই পেয়েছি, কিন্তু জাতীয় এ পুরস্কারটি রাখার নিরাপদ ভবন নেই আমাদের।
প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ জানান, বিদ্যালয়ে বর্তমান যে ভবন আছে, তা পাঠদানের উপযোগী নয়। শ্রেণী কক্ষগুলো নষ্ট ও মেঝে ভেঙ্গে গেছে। খেলার মাঠ নেই। তারপরও বাচ্চারা একের পর এক সফলতা অর্জন করে আসছে। আমরা শেখ হাসিনার ‘৪১ সালের রুপ গল্পের বাংলাদেশ’ গড়তে ভুমিকা রাখতে চাই।
পাটগ্রাম শিক্ষা কর্মকর্তা ফিরোজুল আলম জানান, ওই বিদ্যালয়টি শিক্ষা ও খেলাধুলায় অনেক এগিয়ে। ভবন নিমার্ণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন জানান, তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় এ টুনামের্ন্ট শুরু করেছেন, তার সুফল আজ তার ঘরে। তিনি দাবী করেন, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ উদ্দ্যেগে ওই বিদ্যালয়ের সব সমস্যার সমাধান হবে।