
প্রাপ্তি
-এলিজা খাতুন
চারপাশ ঘিরে আছে অবিশ্বাসের বেষ্টনী
বঞ্চনাময় রাত নামে জীবনের ঘরে
ক্রমশ জাল বুনছে গতিহীনতার মাকড়সা
কোন এক ফাঁক-ফোঁকরে বেরিয়ে গেছি ছিটকে
দৌড়ে এসে দাঁড়াই মহানন্দার তীরে
অনুভবের ছিপ ফেলেছি ঢেউয়ের ভাঁজে ভাঁজে
দৃষ্টির পরিধি জুড়ে দৃশ্যত অসীম আকাশ
মূলত জলের অতলে আকাশের প্রতিবিম্ব !
আর হৃদয়-গভীরে ডুব কাটছে শৈশবের প্রতিচ্ছবি
প্রতিবার ছিপ টেনে টেনে ডাঙায় তুলে দেখি
একে একে উঠে আসছে-
বাঙ্গি-ফুটির ঢালুচর
মাতাল ঘ্রাণময় ধনিয়াক্ষেত,
কচুরিপানার দুরন্ত প্রবাহ
দোল খাওয়া নৌকোর পাটাতনে
চ্যারাগের আলোয় পুঁথিপাঠ,
বাতাসে ঢুপঢাপ আম পড়া শব্দে বাছুর লাফিয়ে ওঠা
এভাবে …… পাওয়া হতে হতে-
যাঁতাপেষা গীতের তালে বাড়ন্ত বেলার হুলস্থূলে
ডাক পড়ে আমার নাম ধরে
ফিরে আসতে হয় বেষ্টনীর নিয়মে
মহানন্দা-কিনার আমাকে খোঁজে কিনা শোনা হয়নি
কিন্তু নিয়ম করে- তার বয়ে চলা মাধুর্য
নীরবে পাঠিয়ে দেয় আমার রক্তপ্রবাহে।
অন্বেষণ
-এলিজা খাতুন
পাল্টে গেছে
যা কিছু আরাধ্য ছিলো সত্য-সুন্দরের মতো;
এতটুকু নমুনার দেখা নেই কোথাও
কোথায় সে যাদুকর!
সমস্ত ঘুমন্ত পাপড়ি জাগাবে এক নিমেষে
ভরাট হেমন্তের সোনা রং ছড়াবে গৃহস্থালিতে
বঞ্চনায় ঝুলে থাকা মানুষেরা
ছিন্ন ছিন্ন বেঁচে থাকে
নিজ নিজ অমূলক আশা নিয়ে
ওদের জড় হতে বলার সে কন্ঠ কই !
কোথায় সে মুখরা-দীপ্তিময় মুখ !
কোথায় সে উষ্ণ হাত !
খুলে দেবে জানালা
এক একটি গ্রিলের ফাঁকে
উঁকি দেবে ফুল, পাখি
উঁকি দেবে যথাযথ প্রতীক্ষা
কোথায় সে চোখ !
যে চোখের দৃষ্টি ছুঁয়ে পাওয়া যাবে
শঙ্কাহীন স্বপ্নের ঘ্রাণ
কোথায় সে যাদুকর !
যার আছে মন্ত্রের পূর্ণতা
আরাধ্যের সুরে যদি পাওয়া যায় তার স্বর
নত হবো তার কাছে
তুলে দেবো বোধের সবটুকু সুষমা।