এলিজা খাতুন

সংবাদ শিরোনাম

-এলিজা খাতুন

 

সেদিন সারারাত দু’চোখ বেয়ে নক্ষত্র, আর
ত্বক বেয়ে গ্রীষ্ম ঝরতে ঝরতে সকাল হয়ে গেছে

বৃষ্টি-বিভোর চোখে দেখি খবরের কাগজে বেরিয়েছে-

প্রথম পাতায়-
আমাদের খাদ্যমন্ত্রী চাল বিতরণ করতে করতে
একপর্যায়ে তার আগামী কালের জন্য ঘরে থাকা শেষ
চালটুকুও তুলে দিলেন সর্বশেষ ক্ষুধার্তের হাতে

কৃষিমন্ত্রী গ্রাম থেকে একজন অভিজ্ঞ কৃষককে
এনে বসালেন তার চেয়ারে ; এবং-
তিনি হলেন তাঁর একনিষ্ঠ সহকারী

অপর পাতায়-
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রিফিং দিয়েছেন-
“আমি স্বাস্থ্য-রোগ-চিকিৎসা বিষয়ক পড়াশোনা-
করিনি বিধায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বিদায় নিচ্ছি”

সুবিধাবাদীরা রাজনীতি থেকে নাম কেটে দিয়ে-
বড় বিপাকে পড়েছেন ; পাশে এসে দাঁড়ালেন-
এ যাবৎ ভোগান্তি পোহানো ব্যক্তিবর্গ

অপর পাতায়-
অপর পাতায়-
…. ….. ….. ….. …..

চতুর্থ পাতায়-
যাদের থাবার নিচে দুর্বাঘাস চাপা পড়ে
হলুদ হয়ে ছিল এতদিন
তাদের তালু ফুঁড়ে উঠেছে অচ্ছুত ফুঁসকুড়ি

পাতা কুড়ুনিরা পাতা কুড়োতে গিয়ে নির্দ্বিধায়
আকাশ ভরা তারা এনে উঠোনে নামিয়েছে
আজ থেকে ওরা ‘তারা’র মালা গাঁথবে

এভাবে পড়তে পড়তে সাহিত্যপাতায় চোখ পড়ে ;
কবিতা লেখা কতক উচ্চপদস্থজন পদক থেকে-
মুখ ফিরিয়ে রাষ্ট্র-দায়িত্বে মনোনিবেশ করেছেন

আজ উল্লেখযোগ্য শিরোনাম আপাতত এটুকুই
এদিকে দুপুর গড়ায়, খবর গরম হয়

শেষ পাতায় দেখি-
আমাদের দুর্ব্যবস্থার অবসান হতে চলেছে-
এ কথা ভেবে কেউ কেউ তারাবাজি কিনতে গেছে
সেইসব অনুকরণ-রত পা-চাটা নির্বোধ পোষ্যরা
অগ্নিসংযোগে মেতে ওঠে নিজ নিজ পশ্চাতে

এভাবে কতক্ষণ ঝরেছে আনন্দধারা মনে নেই
কেননা- তখনও ঘুমের ভেতর
আর এ কথা জানা হয় অনেক পরে
বাজি ফোটা ধুপধাপ শব্দে

আমাদের ঘুমগুলো আরো আগে কেন ভাঙে না !!
তাহলে সকালে ঝলমলে রোদের সাথে
স্বর্ণমুদ্রা নেমে আসা দেখা যেতো… !

 

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here