ডেস্ক রিপোর্ট:: ভোলা-২ (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন) আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুলকে হত্যার হুমকি দেওয়া ফোনালাপ ভাইরাল হওয়ায় এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বরিশালের সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের হয়েছে।
রোববার (১৮ জুন) আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভোলার দৌলতখান প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবু তাহের। যিনি মামলার বিবরণে নিজের পরিচয়ে হিসেবে এমপি আলী আজম মুকুলের একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম ফারুক অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে ভোলা-২ (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন) আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল তার নিজ সংসদীয় এলাকায় খুবই জনপ্রিয়।
সম্প্রতি দৌলতখান উপজেলার নুর মিয়ার হাট এলাকায় হামলা, ভাঙচুর ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় স্থানীয় এমপির কোনো প্রশ্রয় না পেয়ে পক্ষিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সরদার গত ৩ জুন হোয়াটস অ্যাপে ভিডিও কলে আবু কালাম আজাদ নামে জনৈক এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে সংসদ সদস্যকে হত্যার হুমকি দেন। এরপর সেই ফোনালাপের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়।
মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, সাংসদের অনুমতি পেয়ে বাদী গত ১৭ জুন বোরহানউদ্দিন থানায় মামলা করতে গেলে তাকে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেয় পুলিশ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পক্ষিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সরদারের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে মামলার বাদী ভোলার দৌলতখান প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবু তাহের জানান, নুর মিয়ার হাট এলাকায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনার সময় চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সরদারের ছেলে রোহান সরদার ছিল। আর তাকেসহ পুলিশ কয়েকজনকে ওই ঘটনায় আটক করে। আর এসময় স্থানীয় সাংসদের কাছে সহায়তা চাইলে তিনি সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পক্ষে না থাকার কথা জানিয়ে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ভিডিও কলে ওই ব্যক্তি সাংসদকে হত্যার হুমকি দেওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের কথা বলেন।
বাদী বলেন, এ ঘটনা সাংসদকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার পাশাপাশি সাংসদের নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চেল্যের সৃষ্টি হয়। এলাকার জনমনে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে এবং যেকোনো সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটতে পারত।
প্রসঙ্গত, গত ৩-৪ জুনের মধ্যে হুমকি দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের পর থেকেই বোরহানউদ্দিনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ৪ জুন রাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশাপাশি নাগরিক সমাজ বিক্ষোভ করে। ৫ জুন সোমবার সকাল থেকে উপজেলা শহরে ওই চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ। বিক্ষোভকারীরা চেয়ারম্যানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।
পরবর্তীতে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান আল মুন্না বাদী হয়ে আলাউদ্দিন সরদারকে আসামি করে বোরহানউদ্দিন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন ওসি মনির হোসেন মিঞা।
বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনির হোসেন মিঞা বলেন, বরিশাল ট্রাইবুনাল আদালত থেকে নোটিশ আসছে। এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।