ডেস্ক নিউজ :: মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে লন্ডন শহরের দেয়া একটি সম্মাননা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সু চিই হচ্ছেন প্রথম ব্যক্তি যিনি ‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ নামের সম্মাননাটি হারাচ্ছেন। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন বন্ধে তিনি কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃৃপক্ষ।
ব্রিটেনে সু চিকে দেয়া পদক ও সম্মাননাগুলো প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে। রাখাইনে রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিরুদ্ধে বহু দেশ কথা বললেও ব্রিটেন হচ্ছে প্রথম কোনো পশ্চিমা দেশ যেটি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সুর্নিদিষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছে। মিয়ানমার সেনাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি স্থগিত করেছে ব্রিটিশ সরকার। এছাড়া নিরাপত্তা পরিষদে কয়েক দফা আলোচনার অন্যতম উদ্যোক্তা ছিল ব্রিটেন।
বিবিসি জানায়, ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন সম্মাননা দেয় দ্য কমন কাউন্সিল। এই পরিষদে সু চিকে দেয়া সম্মানসূচক বাতিলের বিষয়ে তদন্ত করে দেখার জন্য একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়, ‘শহর কর্তৃপক্ষ এটা স্বীকার করে নিচ্ছে যে অং সান সু চিকে ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন সম্মাননা দেয়া ভুল ছিল।’
গত মে মাসে যখন সম্মাননাটি দেয়া হয় তখনও এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীরা তখন রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সু চি সরকারের আচরণের বিষয়টি তুলে ধরেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে সু চির ‘ফ্রিডম অব দি সিটি অব অক্সফোর্ড অ্যাওয়ার্ড’ প্রত্যাহার করেছে শহর কর্তৃপক্ষ। মিয়ানমারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৭ সালে তাকে এই সম্মাননা জানিয়েছিল যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড সিটি কাউন্সিল।
সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সেন্ট হিউ কলেজ থেকে সু চির প্রতিকৃতি সরিয়ে নেয়া হয়। কলেজটির মূল ভবনের প্রবেশপথে থাকা তার ছবির জায়গায় জাপানি একজন চিত্রকরের একটি চিত্রকর্ম বসানো হয়েছে। সেন্ট হিউ কলেজ থেকে ১৯৬৭ সালে স্নাতক ডিগ্রি নেন সু চি। তার স্বামী ড. মাইকেল অ্যারিস এক সময় ওই কলেজে শিক্ষকতাও করেছেন। সু চি গৃহবন্দি হওয়ার পর ১৯৯৩ সালে তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট দেয় অক্সফোর্ড। এছাড়া সু চিকে দেয়া সম্মাননা স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়ন ইউনিসন।
গ্লাসগো, বাথ, কেমব্রিজসহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় গত ৩০ বছরে সু চিকে সম্মানসূচক ডিগ্রি দিয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি শহর ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও তাকে সম্মাননা দেয়া হয়েছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও সু চিকে দেয়া সম্মাননার বিষয়ে পর্যালোচনা করছে বলে জানায় বিবিসি।