এতিম শিশুর দায়িত্ব নিলে যে সওয়াব পাবেন

ডেস্ক রিপোর্টঃঃ  পিতৃহীন নাবালগ শিশু-কিশোরদের বলা হয় এতিম। বর্তমান সমাজে এতিম অসহায় শিশুর সংখ্যা কম নয়। দরিদ্র অসহায় দুঃস্থ ও এতিমদের জন্য ইসলাম সমাজের ওপর অনেক দায়িত্ব দিয়েছে।

 এতিমের দায়িত্ব নেয়া জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম

ইসলামের দৃষ্টিতে এতিমের লালন-পালনের দায়িত্ব নেয়া জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো এতিমকে আপন মাতা-পিতার সঙ্গে নিজেদের (পারিবারিক) খাবারের আয়োজনে বসায় এবং (তাকে এই পরিমাণ আহার্য দান করে যে) সে পরিতৃপ্ত হয়ে আহার করে, তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।’ (মুসনাদে আহমাদ : ১৮২৫২)।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, জাকাত সদকা এতিম মিসকিন গরিবদের অধিকার। জাকাতের আটটি খাতের মধ্যেও অসহায় দরিদ্র এতিমের কথা রয়েছে।

এতিমের অভিভাবক জান্নাতে নবীজির কাছাকাছি থাকবে

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি ও এতিমের অভিভাবক জান্নাতে দুই আঙুলের ন্যায় অতি কাছাকাছি থাকব। ’ (বুখারি : ৬০০৫) নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এতিমের খোরপোশ ও লালন-পালনের যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করে, আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাত দান করবেন। ’ (তিরমিজি : ১৯১৭)

এতিমের মর্যাদা সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, বিধবা, এতিম ও গরিবের সাহায্যকারী ব্যক্তি আল্লাহর পথে মুজাহিদের সমতুল্য। অথবা তার মর্যাদা সেই (নামাজের জন্য) রাত জাগরণকারীর মতো, যে কখনো ক্লান্ত হয় না। অথবা তার মর্যাদা সেই রোজাদারের মতো, যে কখনো ইফতার (রোজা ভঙ্গ) করে না। (মুসলিম : ৫২৯৫)।

ইসলাম এতিমের সাথে উত্তম আচরণ, এতিমের সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি এতিমের সাথে কঠোর ও রূঢ় আচরণ থেকেও কঠিনভাবে নিষেধ করেছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘সুতরাং আপনি এতিমের প্রতি কঠোর হবেন না।’ (সুরা আদদোহা : ৯)

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে আরো বলেন, সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হলো এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর ওপর, কিয়ামত দিবসের ওপর, ফেরেশতাদের ওপর এবং সব নবী-রসূলের ওপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্মীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, জাকাত দেয় এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হলো সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেজগার। (সুরা আল-বাকারাহ : ১৭৭)

এতিমের প্রতি অবহেলা নয়

বর্তমান সমাজে অনেক সময় দেখা যায়, এতিমের প্রতি অবহেলা ও তুচ্ছতা করা হয়। এতে এসব এতিম ও অনাথ শিশুরা এক ধরনের প্রতিহিংসা নিয়ে বেড়ে ওঠে। মানুষ খাবার খাচ্ছে, কিন্তু সে পাচ্ছে না-এ চিন্তা হিংসার জন্ম দেয়। অন্যদের বস্ত্র আছে, কিন্তু তার নেই এ চিন্তা প্রতিশোধপরায়ণ করে তোলে। এতে এসব শিশুর আচরণ বিকৃত হয়ে যায়। ধ্বংস হয় সুন্দর জীবন।

এ জন্য এতিমের প্রতি বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। নিকটাত্মীয়দের থেকে কারো এগিয়ে আসা উচিত। এ ক্ষেত্রেও লক্ষণীয় হলো, যেন কোনো হক নষ্ট না হয়। এতিমের অধিকার রক্ষা করতে ও অন্যায়ভাবে অধিকার হরণ না করতে হাদিসে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here