স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার এতিমদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে স্মার্ট কর্পোরেট ক্লিনিকের সাথে একটি স্বাস্থ্যসেবা চুক্তি স্বাক্ষরিত করেছে সমাজ সেবা অধিদপ্তর। রাজধানীর আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ এতিমখানায় এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির ফলে স্মার্ট কর্পোরেট ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য মাসিক মাত্র ৯০ টাকার বিনিময়ে প্রতিটি এতিম বালক বালিকা ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারিরা একটি স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

সারাবছর চিকিৎসা পরামর্শের পাশাপাশি দেশব্যাপি ১৬০ টিরও বেশি হাসপাতালে যে কোন রোগের জন্য বছরে তিনবার কেউ যদি হাসপাতালে ভর্তি হয় তাহলে ১০ হাজার টাকা করে বিল কাভারের পাবেন। ১৮টি জটিল রোগের জন্য এককালিন ২৫ হাজার টাকার অর্থিক সহযোগিতা দেয়া হবে। দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত্যু হলে ১ লাখ টাকা দেয়া হবে। স্বাভাবিক মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব বরণ করলে ৫০ হাজার টাকার কাভারেজ পাবে। এছাড়া বাসা বা অফিসে বসেই ৬৫ শতাংশ ভর্তুকিতে বছরব্যাপী ৮ হাজার টাকার পরিক্ষা-নিরিক্ষা করতে পারবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজ সেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সৈয়দ মো. নূরুল বাসির, অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী (পরিচালক প্রতিষ্ঠান), বিশেষ অতিথি ছিলেন হাসিবুর রহমান মানিক কাউন্সিলর (২৬ নং ওয়ার্ড) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, স্মার্ট কর্পোরেট ক্লিনিকের প্রজেক্ট চীফ ও হেড অফ বিজনেস অলোক কুমার বিশ্বাস ও সমাজ সেবার উপ-পরিচালক (ঢাকা জেলা) মো.রকনুল হক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মো. নূরুল বাসির বলেন, জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো। এতিমখানা থেকে বের হয়ে অনেকেই বড় বড় জায়গায় অবস্থান করছে। সবার আগে মানুষ হতে হবে। এমনও দেখেছি ভাগ্যের পরিহাসে অনেক মানুষ প্রাসাদ ছেড়ে রাস্তায় চলে এসেছে আবার রাস্তার মানুষ প্রাসাদে উঠে গেছে। আমার সহকর্মী কামরুল ইসলাম চৌধুরী একজন উদ্দ্যোগি মানুষ, তার উদ্দ্যোগে এ এতিমখানা অনেক এগিয়ে গেছে ভবিষৎতে আরও এগিয়ে যাবে বলে আশা করছি।

রোকনুল হক বলেন, একটা সময় ছিলো অঝোরে ঝরে পড়েছিলো প্রতিষ্ঠানটি কেউ দেখার ছিলো না এমসকি দেখতে চায়ওনি। দিন দিন ছাত্র ছাত্রি কমেছে। কিন্তু কামরুল ইসলাম স্যারের কারণে প্রতিষ্ঠানটি আবার ঘুরে দাড়াতে শুরু করেছে। ভালো উদ্দ্যোগ নিতে মন লাগে,সাহস লাগে এটা সবাই পারে না। বাংলাদেশে অনেক অবহেলিত মানুষ আছে যাদের থাকা-খাওয়ার জায়গা নেই তাদেরকে খুজে নিয়ে আসতে হবে।

সভাপতির বক্তবে কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ এতিমখানায় যেদিন প্রথম এসেছিলাম সেদিন আমার চোখে ধরা পড়লো জরাজির্ন চিকিৎসাঘরের সাইসবোর্ড। দেখে মনে হচ্ছিলো পরিত্যাক্ত। তখন আমার কাছে কৌতুহল জাগলো ভিতরের অবস্থাটা দেখার। পরে দেখি চাবি খুজে পাচ্ছে না,তালার উপরে ধুলাবালুর আস্তরণ পড়ে আছে। ভিতরের দেখে মনে হচ্ছিলো একটা সময় এখানে ডাক্তার বসতো। কিন্তু বর্তমানে রুমের চেয়ার টেবিল দেখলে অসুস্থ হওয়ার অবস্থা। অস্বাস্থ্যকর একটা পরিবেশ। তখনই আমার মনে হলো এখানে আবারও চিকিৎসা ব্যবস্থা সচল করা দরকার। কারণ আমাদের নিবাসিরা যদি হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে তাহলে যাবে কোথায়। তারা যদি নিয়মিত চেকআপ করে তাহলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমে যাবে। সে চিন্তা থেকেই আমার এ উদ্দ্যোগ। এখানে প্রতি মাসে ফুল টাইম আমরা দুজন ডক্টর পাবো। যেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ সবাই চেকআপ করতে পারবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here