স্টাফ রিপোর্টার :: প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের এক মাসের খাবারের বিল ২০ কোটি টাকা কী করে হয়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টম (বাজেট) অধিবেশনে আলোচনায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা।

সোমবার একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টম (বাজেট) অধিবেশনে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। খবর: বাসস

সোমাবর বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের খাবারের বিল ২০ কোটি টাকার প্রসঙ্গটি তোলেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলীয় উপনেতার বক্তৃতার সঙ্গে একমত পোষণ করে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের এক মাসের খাবারের বিল ২০ কোটি টাকা কি করে হয়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, এখানে বিরোধী দলের উপনেতা ঠিকই বলেছেন, থাকা-খাওয়া বাবদ মেডিকেল কলেজের হিসেব অনুযায়ী ২০ কোটি টাকা ব্যয় একটু বেশিই মনে হচ্ছে। তবে, এটা আমরা তদন্ত করে দেখছি, এত অস্বাভাবিক কেন হবে। এখানে কোন অনিয়ম হলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

শেখ হাসিনা দৃঢ় কন্ঠে বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে, এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। দুর্নীতি সমূলে উৎপাটন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং আমাদের অর্জনসমূহ সমুন্নত রাখতে সরকার দুর্নীতি বিরোধী লড়াই অব্যাহত রাখবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে তার সরকারের দেওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটকে কেউ কেউ উচ্চাভিলাষী বললেও সরকার এই বাজেটের সফল বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে আমরা অতীতে কখনো ব্যর্থ হইনি এবং ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হব না। আমরা কখনো হতাশায় ভুগি না। আমরা সব সময় একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাই। দেশে পর্যাপ্ত চালের মজুত রয়েছে এবং ভবিষ্যতে যে সংকটই আসুক না কেন, আওয়ামী লীগ সরকার তা শক্তভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে বলেও এ সময় দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোভিড-১৯-এর প্রভাবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে যে সাময়িক প্রয়োজন উদ্ভূত হয়েছে তা মেটানো এবং অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে যে ক্ষয়ক্ষতি সৃষ্টি হবে, তা পুনরুদ্ধারের কৌশল বিবেচনায় নিয়ে অর্থমন্ত্রী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, এটি আওয়ামী লীগ সরকারের ১৭তম এবং বর্তমান মেয়াদের দ্বিতীয় বাজেট। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সরকার পরিচালনা করেছিলেন সেখানে তিনটি বাজেট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। সে হিসাবে এটি আওয়ামী লীগের ২০তম বাজেট, যেটি আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশকে উপহার দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলা এবং এর অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য আমরা গতানুগতিক বাজেট থেকে সরে এসে সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে কাঠামোগত পরিবর্তন নিয়ে এসেছি। স্বাস্থ্য খাতকে এবার সর্বাপেক্ষা অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এ খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ প্রভৃতির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তা ছাড়া কোভিড-১৯ মোকাবিলায় জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাজেট বরাদ্দের দিক দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অবস্থান পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে, যা গত অর্থবছরে ছিল অষ্টম স্থানে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here