আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত বলেছেন, বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে ভারতকে একতরফা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া হবে না। টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণে ভারতের চুক্তি সই প্রসঙ্গে তিনি একথা বলেন।

সোমবার সকালে পাবলিক লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট মেয়র হানিফের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

‘বোমাবাজি, হত্যা, জঙ্গিবাদ যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের জন্য বিএনপির জন্ম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি চিত্রনায়ক ফারুক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুরঞ্জিত বলেন, আন্তর্জাতিক নদী বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষ ভারতের একতরফা কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। আন্তর্জাতিক আলোচনা ব্যর্থ হলে সম্ভব্য সকল ব্যবস্থা নেবে সরকার।

টিপাইমুখ সমস্যা সরকার দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চায় উল্লেখ করে সুরঞ্জিত বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। বন্ধু সুলভভাবেই বাংলাদেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখেই এই সমস্যা সমাধানে পৌঁছাতে হবে।

তিনি বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ ইস্যু একটি জাতীয় সমস্যা। দলীয়ভাবে এটা দেখার কোনো সুযোগ নেই। তিনি আরো বলেন, ভারত বিরোধিতার নামে জাতীয় ইস্যুকে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করার কোনো সুযোগ নেই। জাতীয় ঐক্যের ওপর দাঁড়িয়ে বিরোধী দলের উচিত, সমস্যা সমাধানে সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেয়া।

আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, সমস্যা সমাধানের দুটি পথ খোলা আছে। এক. দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে এবং দুই. ভারতের বৈরীতা সম্পর্ক সৃষ্টির মাধ্যমে। এ সময় তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন- বিরোধী দল কোনটি চায়?

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং- কে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিঠি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারকে বাইপাস করে খালেদা ভারত সরকারকে চিঠি দিয়েছে। ভারত এই চিঠির উত্তরও দিয়েছে। চিঠি ও এর জবাব, উভয়ই গোপন করা হয়েছে। জাতির সামনে এই চিঠি ও এর জবাব প্রকাশ করলে জাতি উপকৃত হবে।

বিএনপির রোড মার্চ প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত বলেন, মার্চ করা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। তিনি বলেন, টিপাইমুখে বাঁধ ও তিস্তা সমস্যাগুলো জিয়ার আমলেই সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় এই সমস্যাগুলো সমাধান করলে এখন আর কোনো সমস্যা হত না।

তিনি আরো জানান, টিপাইমুখে বাঁধ হলে তা হবে বাংলাদেশের জন্য মরণ ফাঁদ। বাংলাদেশের মানুষের জীবন-মরণ ও অস্তিত্বের প্রশ্ন দেখা দেবে। পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য নষ্ট হবে। কৃষির জন্য এই বাঁধ মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

সুরঞ্জিত বলেন, হাসিনা-মনমোহন বৈঠকে যে যৌথ ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছিল, তাতে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল- দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আগাম আলোচনা ছাড়া কোনো দেশ এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না।

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, কৃষক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক শানে আলম মুরাদ প্রমুখ।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here