ফরহাদ খাদেম, ইবি সংবাদদাতা ::
পবিত্র ঈদ-উল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি উপলক্ষ্যে আগামী ১০ জুন সকাল ১০টা থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত (১৪ দিন) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হল সমূহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে এই সময়ে হল খোলা রাখার দাবিতে উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মঞ্চ (ঐক্যমঞ্চ)। 
সোমবার (০৩ জুন) বেলা ১১ টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের নিকট স্মারকলিপি দেয় সংগঠনটি।
এসময় ঐক্যমঞ্চের আহ্বায়ক রাবেয়া খাতুন, সদস্য সচিব এস এ এইচ ওয়ালিউল্লাহ, আবৃত্তি আবৃত্তির সভাপতি গোলাম রব্বানী, সিআরসির সভাপতি শাহীদ কাওসার ও তরুণ কলাম লেখক ফোরামের সভাপতি আবু তালহা আকাশসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্মরকলিপিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও গোষ্ঠীর শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। নির্দিষ্ট ধর্মীয় এসব ছুটিতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী অনেক শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হয় এবং দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। এছাড়া ছুটিতে কিছু সিনিয়র শিক্ষার্থী বিভিন্ন আর্টিকেল ও চাকুরির পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে চায়। কিন্তু তাদের জন্যেও সময়টা কাজে লাগানো সম্ভব হয় না।
এদিকে একই দাবিতে সোমবার দুপুর ২ টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রধান ফটক অবরোধ করে আন্দোলন করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট ক্লাব। এসময় দুপুর ২টার শিফটে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসগুলো ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে আটকা পড়ে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ শহরগামী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে প্রধান ফটক খুলে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে বিকেল তিনটার দিকে উপাচার্যের বাংলোতে উপাচার্যের সাথে দেখা করেন তারা। সেখানে ঈদের ছুটিতে হল খোলা রাখার জন্য উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করতে যায় ক্রিকেট ক্লাবের সদস্যরা। সেখানে দুপুর ২টা পর্যন্ত (৩ঘন্টা) অপেক্ষা করেও উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেনি তারা। পরে  তারা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধান ফটক অবরোধ করেন।
ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি শেখ সাকলাইন বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো সারা বছর খোলা থাকে। কিন্তু ঈদের ছুটিতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো বন্ধ থাকে। এতে পিছিয়ে পড়ছে চাকুরী প্রত্যাশীরা। এছাড়া দুর্ভোগ পোহাতে হয় ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করেই আমরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি।
ঐক্যমঞ্চের সদস্য সচিব এস এ এইচ ওয়ালিউল্লাহ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বছরের প্রায় অর্ধেক সময়ই বন্ধ থাকে। এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটির সাথে কম-বেশি করে হলগুলাও দীর্ঘদিন বন্ধ রাখা হয়। এক্ষেত্রে বিশেষত দূরের শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়ে। আবার নির্দিষ্ট ধর্মীয় কোন ছুটিতে হল বন্ধ থাকলে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদেরও ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হয়। আবার লেখাপড়ার শেষ স্তরে থাকা চাকুরী প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরাও মারাত্মক অসুবিধায় পড়েন। এই কারণেই শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আমরা ভিসি স্যার বরাবর আবেদন জানিয়েছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এ বছর হল খোলা রাখা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। এগুলো আগে থেকেই নির্ধারণ করা থাকে। আগামীতে আমরা হল খোলা রাখার বিষয়টি বিবেচনা করবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here