ঈদের কেনাকাটায় উপচে পড়া ভীড়

মহানন্দ অধিকারী মিন্টু, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি :: ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে খুলনার পাইকগাছায় বিপনী বিতানগুলোতে ততই ভিড় বাড়ছে। শেষ মুহুর্তে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কিশোর-কিশোরী, রমনী সহ সব বয়সের মানুষ। বিপনী বিতানগুলোর মধ্যে প্রসাধনী, ছিট কাপড় ও পোশাকের দোকানে রমনীদের উপচে পড়া ভীড় পরিলক্ষিত হচ্ছে।

মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরের বাকী রয়েছে আর মাত্র কয়েকদিন। ২টি বড় ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে ঈদুল ফিতর সবচেয়ে বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। দীর্ঘ ১ মাস সিয়াম সাধনার পর প্রতিটি মুসলমানের বাড়ীতে বাড়ীতে খুশির বার্তা নিয়ে আসে ঈদ।

ঈদের আনন্দ পরিবার পরিজন ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে ভাগাভাগি করে নিতে কোনো কমতি থাকে না। ঈদ আনন্দ ও ঈদ সংস্কৃতির সাথে নতুন পোশাকের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। নতুন পোশাকের মাঝেই যেন নিহিত রয়েছে ঈদের সব আনন্দ। নতুন পোশাক ছাড়াই ঈদের সব আনন্দ যেন ম্লান। ঈদে নতুন পোশাক প্রদান ও গ্রহণের মাঝে সবাই ঈদের আনন্দ উপভোগ করে থাকে।

পরিবার পরিজন ও প্রিয় মানুষকে ঈদে নতুন পোশাক দিতে কেউ যেন ভুল করে না। আবার পরিবারের অভিভাবকদের কাছে নতুন পোশাক পাওয়ার প্রত্যাশায় অপেক্ষায় থাকে পরিবারের  সদস্যরা। সব মিলিয়েই ঈদে সব শ্রেণী ও সব বয়সের মানুষেরাই নতুন পোশাকের মাঝে আনন্দ খুঁজে পায়। ঈদে প্রিয় মানুষকে উপহার হিসেবে নতুন পোশাক প্রদান করার মাঝে অনেক বেশি আনন্দ উপভোগ করে সবাই।

এ জন্য ঈদ আসলেই জমে উঠে নতুন পোশাক কেনাকাটা। ঈদকে ঘিরেই এলাকার অভিজাত বিপনী বিতান, প্রসাধনী ও পোশাকের মার্কেটগুলোতে মজুদ করা হয় পছন্দের পোশাক ও প্রসাধনী। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও পৌর সদর, বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনি, বাঁকা বাজার সহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। প্রচন্ড গরমের মাঝে ঈদের কয়েকদিন বাকী থাকতেই কেনাকাটার কাজ সেরে নিচ্ছেন বেশির ভাগ মানুষ। বিপনী বিতানগুলোতে পুরুষের চেয়ে কিশোর-কিশোরী ও রমনীদের উপস্থিতি বেশি রয়েছে।

অনেকেই বলছেন, ঈদের কাছাকাছি সময়ে পুরুষের কেনাকাটা বেশি হয়। আবার অনেকেই বলছেন, ঈদের কেনাকাটায় রমনীদের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকে। বিগত বছরে ভিন্ন ভিন্ন নামে কিছু পোশাকের পরিচয় কিংবা কেনাকাটার ধুম পড়লেও এ বছর মার্কেটগুলোতে এমন বিশেষ কোনো পোশাকের পরিচয় কিংবা কেনাকাটা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

এবারের ঈদে বেশি বিক্রি হচ্ছে সুতি কাজ করা থ্রি-পিচ। যার মূল্য ৫শ থেকে আড়াই হাজার টাকা। কাজ করা জর্জেট থ্রি পিচ যার মূল্য ১ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। সিল্ক ৪ পার্ট ও ৪ পার্ট থ্রি পিচ দেড় হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। বাটিক কাজ করা থ্রি পিচ ৫শ থেকে ৭শ টাকা। শিশুদের পছন্দের মধ্যে রয়েছে ইন্ডিয়ান ফ্রোগ ১১শ থেকে ২২শ টাকা। গাউন ৭শ থেকে দেড় হাজার টাকা।

রমনী সুমি জানান, ঈদে প্রিয় মানুষের কাছ থেকে উপহার হিসেবে নতুন পোশাক পাওয়ার আনন্দই আলাদা। এবারের ঈদে তিনি উপহার হিসেবে সুঁতির কাজ করা থ্রি পিচ পেয়েছেন বলে জানান। বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনির কয়েক জন বিপনী বিতানের স্বত্ত্বাধিকারী জানান, বিগত ঈদের ন্যায় এবারের ঈদে বিশেষ নামধারী কোনো পোশাকের চাহিদা নাই। তবে ক্রেতারা তাদের পছন্দমত পোশাক কিনছে। কেনাকাটাও ইতোমধ্যে বেশ জমে উঠেছে। আশা করছি, এবারের ঈদে ভালো কেনাবেচা হবে।

আরো জানান, এবারের ঈদে গাউন, ওয়ান পিচ হাতের কাজের পাঞ্জাবী, বাচ্চাদের রেডিমেট ড্রেস ও এর পাশাপাশি ডিজাইন দিয়ে কাজ করা পোশাকের চাহিদা রয়েছে এবং সাধারণ ক্রেতারা এ ধরণের পোশাক কিনছে এবং অর্ডার দিচ্ছে। ঈদের সময় আরো কিছুটা এগিয়ে আসলে ঈদের কেনাকাটা শেষ মুহুর্তে অনেক বেশি জমজমাট হবে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here