ডেস্ক রিপোর্ট:: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বিচারককে হুমকি দেওয়ার এক মামলায় বুধবার ইসলামাবাদের আদালত এই পরোয়ানা জারি করেছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন বলেছে, বিচারককে হুমকির মামলায় পিটিআই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি করেছে ইসলামাবাদের আদালত। একই সঙ্গে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে আগামী ১৮ এপ্রিল আদালতে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ২৪ মার্চ ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জেবা চৌধুরীকে দেওয়া হুমকির মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন এই মামলার শুনানির সময় আদালত পিটিআই প্রধানের জারি করা জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে দলটির আইনজীবীর অনুরোধে জামিনযোগ্য পরোয়ানায় রূপান্তরিত করে।
বুধবার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মালিক আরমান এই আদেশ দিয়েছেন। আদালতে ইমরানের পক্ষে ছিলেন তার আইনজীবী ফয়সাল চৌধুরী। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন রিজওয়ান আব্বাসি।
শুনানির শুরুতে ইমরানের অনুপস্থিতি নিয়ে আপত্তি জানান বিচারক। তিনি বলেন, আদালতে উপস্থিত থাকতে ব্যর্থ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে জারি করা জামিন যোগ্য পরোয়ানা জামিন অযোগ্যতে রূপান্তরিত হবে।
রিজওয়ান আব্বাসি বলেন, ‘ওয়াজিরাবাদের ঘটনার বিষয়ে আমরা তার অজুহাত শুনেছি। দুই দিন আগেও আরেকটি আদালতে হাজির হয়ে তিনি একই অজুহাত দেখিয়েছিলেন। আদালতে ইমরানের উপস্থিতি থেকে অব্যাহতির অনুরোধ প্রতিটি শুনানিতে মঞ্জুর করা হয়েছিল।’
ধারাবাহিকভাবে আদালতের শুনানিতে অনুপস্থিত থাকার কারণে ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল বলে সর্বশেষ শুনানিতে বিচারকের বক্তব্য আদালতে তুলে ধরেন আব্বাসি।
বুধবার উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালতের বিচারক ইমরানের বিরুদ্ধে নতুন করে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে আগামী ১৮ এপ্রিল তাকে আদালতে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
এর আগে, গত ১৩ মার্চ একই মামলায় ইসলামাবাদের আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক রানা মুজাহিদ রহিম ইমরানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। পরবর্তীতে পিটিআই জেলা আদালতে এই পরোয়ানাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন করে।
গত বছরের ২০ আগস্ট ইসলামাবাদের এফ-৯ পার্কে জনসমাবেশে দেওয়া ভাষণে ইমরান খান সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, তিনি ইসলামাবাদ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও একজন নারী ম্যাজিস্ট্রেট জেবা চৌধুরীকে দেখে নেবেন। পিটিআইয়ের নেতা শাহবাজ গিলকে গ্রেপ্তারের পর নির্যাতন করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলেও হুমকি দেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
সেই সময় তিনি বলেছিলেন, আমরা আইজি এবং ডিআইজিকে ছাড়বো না।
সাবেক এই পাক প্রধানমন্ত্রী সমাবেশে অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ জেবা চৌধুরীর নাম উল্লেখ করেন। ইমরান খান এই বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার বিরুদ্ধেও মামলা হবে, প্রস্তুতি নিন। তার এই হুমকির পর ইসলামাবাদের আদালতে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়।