স্টাফ রিপোর্টার :: ইউসেপ বাংলাদেশ -এর চেয়ারপারসন পারভীন মাহমুদ এফসিএ বলেছেন, ইউসেপ বাংলাদেশ বিগত দশ বছরে প্রায় এক লাখ তরুণ-তরুণীকে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। এর মধ্যে শতকরা ৪০ভাগ নারী এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর সংখ্যা শতকরা ৪ ভাগ। ইউসেপ বাংলাদেশ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৯০ ভাগ শিক্ষণার্থীর কর্মসংস্থান করছে।
ইউসেপ বাংলাদেশ এর উদ্যোগে সোমবার (১৫ জুলাই) মিরপুরস্থ ইউসেপ মিলনায়নে বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এক কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, ইউসেপ বাংলাদেশ ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ১ লাখ ৩৯ হাজার জন শিশু ও যুবকের জন্য সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে শোভন কর্মসংস্থান এবং আত্মকর্মসংস্থনের ব্যবস্থা করবে, এর মধ্যে কমপক্ষে ৫০ভাগ হবে নারী এবং ৫ ভাগ হবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। ইউসেপ বাংলাদেশ সামাজিক অন্তর্ভূক্তির ব্যাপারেও বিশেষ নজর রাখছে। বিশেষ করে দরিদ্র এবং সুবিধাবঞ্চিত নারী, শিশু,তরুণ-তরুণীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইউসেপ বাংলাদেশ -এর ১০টি কারিগরি বিদ্যালয় আছে। এছাড়াও ১৭টি কারিগরি আউটরিচ সেন্টার (এর মধ্যে ৩টি সরকার পরিচালিত সেন্টার), ২টি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এবং ২টি ইউসেপ ট্রেনিং ইন্সটিটিউট আছে। এছাড়াও আছে ৩২টি সাধারণ বিদ্যালয়। এর মাধ্যমে ইউসেপ বাংলাদেশ ৩৭টি চাহিদাভিত্তিক ৩ থেকে ১২ মাসের প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, এবার ২০১৯ সালে এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় পাশের হার ৯৮.১৭%। এর মধ্যে মেয়েদের পাশের হার হলো ৯৯ ভাগ। শুধু ২০১৯ সাল নয়, বিগত সালগুলোতে ইউসেপ বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করে কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ সুনাম অর্জন করেছে।
পারভীন মাহমুদ বলেন, জাতিসংঘ মনে করছে, আগামী দিনে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় তরুণরা প্রায় তিনগুণ বেশি বেকার হতে পারে এবং শ্রম বাজারে নানান বৈষম্যের কারণে অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। এটা একটি ভয়াবহ সংকট। কিন্তু এ সংকট কোনো অবস্থায় ইউসেপ বাংলাদেশ পাশ কাটিয়ে যেতে চায় না। ইউসেপ বাংলাদেশ সংকট মোকাবেলা করে উত্তরণের পথ খুঁজে নিতে চায়। এজন্য সরকার, উন্নয়ন সহযোগী এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে যেতে বদ্ধ পরিকর। ইউসেপ বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন বৈশ্বিক লক্ষ্য মাত্রা (এসডিজি) ৪, ৫, ৮, ১০ অর্জনের জন্য সরাসরি এবং ১,২,৩ অর্জনের জন্য পরোক্ষভাবে কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার আমাদের দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করতে হলে, সরকার এবং বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে কাজ করতে হবে। এই উদ্যোগ প্রসারিত হলে দেশের সামগ্রিক আত্মসামাজিক উন্নয়নে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য ভবিষ্যতের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করা সহজতর হবে। তাদের জন্য শোভন কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে দেশের লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনে দেশের তরুণ সমাজ ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবে। ইউসেপ বাংলাদেশ এব্যাপারে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে চাই।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পিকেএসএফ এর চেয়ারম্যান প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. খলীকুজ্জামান আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিসিস এর প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবীর, আইপিডিসি ফাইনেন্স লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম, পাম নেদারল্যান্ডসের কনসালটেন্ট মিজ আকি ওকামা এবং স্টাট আপ বাংলাদেশ আইসিটি বিভাগের ইনভেস্টমেন্ট পরামশর্ক মিজ টিনা জেবিন।
বক্তব্য রাখেন ইউসেপ বাংলাদেশ -এর ভাইস চেয়ারপারসন লায়ন জেএল ভৌমিক, ইউসেপ বাংলাদেশ -এর নির্বাহী পরিচালক তাহসিনাহ আহমেদ প্রমূখ।