জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম মিলন হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে জেলা পুলিশ। হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ২জনকে আটক করা হয়েছে।

পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে অভিযান চালিয়ে ২টি বন্দুক, ২টি এলজি, ২৬ রাউন্ড কার্তুজ, ২টি ট্রেসার লাইট ও ২টি মাফলার উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামন।

মতবিনিময় সভায় বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ সদর উপজেলার বটতলী এলাকা থেকে মিলন হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যতম আসামি মো. জসিমকে আটক করে। পরে মিলন হত্যাকান্ডের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করে সে। তার দেওয়া তথ্য মতে চরচামিতা এলাকার মিজি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হত্যকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলিসহ বিভিন্ন সরঞ্জমাদি উদ্ধার করা হয়।

পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতার সামনে আটক জসিম স্বীকার করে সে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর মিলন মেম্বার হত্যাকান্ডের দিন জসিম, লোকমান ও তার এক সহযোগী মিলে মিলন মেম্বার হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি সিএনজি চালক জামাল ও হত্যাকান্ডে জড়িত অপর ৫জনের নিকট থেকে বুঝে নেয় সে। হত্যাকান্ড শেষে জসিম তার ২সহযোগীসহ অস্ত্র ও গুলি চরচামিতা এলাকার মিজি বাড়ি মসজিদ সংলগ্ন পরিত্যক্ত রুমের ভেতরে রেখে দেয়।

ইতোমধ্যে পুলিশ কর্তৃক সিএনজিসহ জামালকে গ্রেফতারের সংবাদ পেয়ে তার সহযোগীদের নিয়ে উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গুলি বালির নিছে গর্ত করে লুকিয়ে রাখে। এর আগে হত্যকান্ডে জড়িত সিএনজি চালক জামালকে ঘটনায় ব্যবহৃত নম্বর বিহীন সিএনজিসহ গ্রেফতার করে জেলা পুলিশ। সিএনজি চালক জামাল আদালতে তার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী প্রদান করে।

এছাড়া এ হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামী ইলিয়াছ কোবরা গত ১৪ অক্টোবর দত্তপাড়ার বকুলতলা এলাকায় রাতে দুইদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে নিহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১টি বন্দুক ও ২রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে।

পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামন বলেন, এ হত্যকান্ড একটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। আসামীদের সঙ্গে মিলন মেম্বারের দীর্ঘ দিনের শত্রুতা ও স্থানীয় বিরোধের ফলে এ হত্যাকান্ড ঘটে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনোয়ার হোসেন, পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন ও চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

উলেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে সদর উপজেলার দত্তপাড়া এলাকার আলাদাদপুর মসজিদের দক্ষিণ পাশে লিটনের মুদি দোকানে একদল মুখোশধারী সন্ত্রাসী মিলন মেম্বারকে গুলি করে হত্যা করে। নিহত মিলন দত্তপাড়া ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here