স্টাফ রিপোর্টার :: ভ্রমণকণ্যা নাজমুন নাহারের জন্ম ও শৈশব কেটেছে লক্ষ্মীপুরে। স্কুল জীবনে ভূগোলের প্রতি আকর্ষণটা সেখান থেকেই । তিনি বলেন, আমার প্রধান শিক্ষক প্রয়াত আমানত উল্লাহ স্যার আমাকে কাঠের মানচিত্র খণ্ড-বিখণ্ড করে জোড়া লাগাতে বলতেন। সেটা সুন্দরভাবে জোড়া লাগানোর পর পৃথিবীর মানচিত্র দিতেন। সেটাও খুব দ্রুত ও সুন্দরভাবে জোড়া লাগিয়ে দিতাম আমি। তখনই ভূগোলের প্রতি আগ্রহ জন্ম নেয়। এরপর পড়েছি দালালবাজার নবীন কিশোর উচ্চবিদ্যালয়। এসএসসির পর লক্ষ্মীপুর সরকারী কলেজে থেকে এইসএসসি পাশ করে ভর্তি হই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
নাজমুন নাহার জানান, যখন ছোট ছিলাম, আমার মনে আছে, ফোর/ফাইভে পড়ি, তখন পড়াশুনা করতাম বাড়ির সামনের খোলা জায়গায়। নারকেল সুপারির বাগানে। একটা নারকেল গাছের নিচে পাটি বিছিয়ে পড়তাম। চেয়ার টেবিলে পড়তাম না। প্রকৃতির মধ্যে বসে বসে পড়তে ভালো লাগতো। তখন মনে হতো পৃথিবীর প্রকৃতিগুলো দেখবো। ভ্রমণ কাহিনী পড়তে ভালো লাগতো। এছাড়া শৈশবে বাবার মুখে আরবের কথা শুনতাম। কারণ, আমার দাদা ১৯২৬ থেকে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত আরব ভ্রমণ করেছেন। সেসব গল্প শুনেই বড় হয়েছি। তখন মনে সাধ জন্মেছে আমিও ঘুরবো। দেশ বিদেশ দেখবো। আমার মনে হয়, আমি জন্মেছি ভ্রমণের জন্য।
নাজমুন নাহার সূত্রে জানাযায়, ঘোরাঘুরির আগ্রহ থেকেই বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্কলারশিপের জন্য আবেদন শুরু করলাম। মিলেও গেলো। সুইডেনের লোন ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষা বৃত্তি পেয়ে গেলাম। ২০০৬ সালে সুইডেন যাওয়ার পরে মনে হয়েছে আমি ঘুরতে পারবো।
আমি চাইছিলাম স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ থাকা পর্যন্ত ইউরোপের যত বেশি দেশ পারি ঘুরবো। বাবার থেকে যে টাকা নিতাম সেটা থাকা-খাওয়া, পড়াশুনার পেছনে ব্যয় করতাম। ঘোরার জন্য টাকা আয় করতে শুরু করলাম। কঠিন পরিশ্রম করলাম। সামারের তিনমাসে টানা নব্বই দিন, একানব্বই দিন কাজ করতাম। ছুটির দিনগুলোতে সতের আঠার ঘণ্টা কাজ করেছি। সেই টাকা দিয়ে শুধুই ঘুরেছি। কারণ তখন আমার মনে হয়েছে, স্টুডেন্ট ভিসা শেষ হয়ে গেলে বুঝি আমার চলে আসতে হবে। এই সময়ে যতবেশি সংখ্যক দেশ পারি ঘুরবো। এই সময়টায় আমার তিনটাই কাজ ছিল। পড়াশুনা, কাজ এবং ঘোরাঘুরি।