মীর আব্দুল আলীম

মীর আব্দুল আলীম :: সকালে টেলিভিষণটা অন করতেই চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ। মনটা খারাপ হয়ে গেল। ভোরে (২৩ জানুয়ারী) লক্ষ্মীপুরে ট্রাকের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার ৭ জন নিহত হওয়ার খবর প্রচারিত হচ্ছিল। এ দুর্ঘটনায় একই পরিবারের মারা গেছেন ৬ সদস্য। পিচঢাল সড়ক বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পরছে। পাশেই ক্ষতবিক্ষত লাশের সারি। দেখলাম কচি দ’ুটো মুখ থেতলানো, বৃদ্ধের বিচ্ছেন্ন শরীর দেখে অসুস্থ্য হয়ে পরলাম। এভাবে আর কত লাশ দেখতে হবে আমাদের? আমাদের সড়ক কি কখনো নিরাপদই হবে না?

আমরা কি ঘর থেকে রাস্তায় বেরিয়ে আবার নিরাপদে বাড়ি ফেরার আশা করতে পারব কখনো? খুনে সড়ক নিয়ে কেউ ভাবে না। কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ বেতনভাতা বাড়ানোর জন্য দিনের পর দিন অনশন করেন। প্রায়ই শিক্ষক, ডাক্তার, ব্যবসায়ী, সাংবাদি, উকিল, নার্স সবাই নিজেদের লাভের খোঁজে দাবি আদায়ে সোচ্ছার হন, কিন’কাউকেই নিরাপদ সড়কের জন্য এমন উদ্যোগী হন না। প্রতিদিন সড়কে ১০/১২ জন করে মানুষ মরছে। এটা কি সহজ কথা! এটা তো সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু নয়, এটা হত্যান্ড। এদেশে খুনখারাপিতে, দাঙ্গা-হাঙ্গায়, গুম-খুনে যত মানুষ মারা যাচ্ছে তার চেয়ে বহু গুন মানুষ মারা যায় গাড়ির চাকায় পৃষ্ঠ হয়ে। কি করছি আমরা, কি করছে সশ্লিষ্টরা? আর সরকারই বা কি করছে? আমাদের নিরাপদ রাখার কোন দায়িত্ব কি সরকারের নেই? আসলে সড়কের ব্যাপারে কেউ তেমনভাবে না বলেই মনে হয়। কার্যকর কিছু একটা যদি করা হত তাহলে আমাদের সড়ক এত অনিরাপদ কেন?

দেশে নতুন নতুন সড়ক হচ্ছে, যমুনায় সেতু হয়েছে, স্বাপ্নের পদ্ম সেতু হচ্ছে, উন্নত বিশ্বের আদলে ফ্লাইওভার হয়েছে, রাজধানীতে সুন্দর লেক হয়েছে, ফোয়ারা হয়েছে, উন্নত বিশ্বের মতো মেট্রো রেলও হবে। এতো কিছুর পর সড়ক কি নিরাপদ হবে? সড়ক নিরাপদ করতে যারা দেশ চালান তাদেরতো ভাবনা থাকতে হবে? এত মানুষ প্রতি দিন মারা যাচ্ছে, খুন হচ্ছে তাতেও দিলে চোট পাচ্ছেন না কেন আপনারা? আপনারা কি দয়া মায়াহীন মানুষ? স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসার কোমল মতি শিশুরা রাস্তায় পিষ্ট হচ্ছে, ওদের কচি মাংস থেঁতলে-পিষে সড়কে এবড়ো খেবড়ো হয়ে যাচ্ছে, ওদের শরীরের টগবগে রক্ত পিচঢালা কালো রাস্তা রাঙ্গা করে দিচ্ছে। এর কি কোন প্রতিকার নেই? একটা গণআন্দোলন খুব দরকার। সড়ক নিরাপদ করতে চাই গণআন্দোলন। চাই একটা যুদ্ধ। যুদ্ধ হবে সড়ক হন্তাড়কদেও বিরুদ্ধে। সবাই সে আন্দোলনে সামিল হোক। মন্ত্রী, আমলা, শিক্ষক, সাংবাদিক, উকিলসহ পেশাজীবী সবাই রাস্তায় নেমে আসুক নিরাপদ সড়কের জন্য। আমরা ক’জন মাঝে মাঝে চেঁচামেচি করি, চিত্র নায়ক ইলয়াস কাঞ্চন কোন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলে রাস্তায় নামেন। তাতে আর কতটুকু নটক নড়ে সংশ্লিষ্টদের?

সেদিন আমার ডাক্তার ছেলেটা পত্রিকা পড়ার ফাঁকে নাশতার টেবিলে বলছিল- বাবা লক্ষ করেছ, দুর্ঘটনা এখন কোনো বিষয় নয়। এ ব্যাপারে সবাই যেন স্বাভাবিক। উত্তরে আমি বলেছিলাম, একটি কাজ করতে পারো? ডাক্তারি পেশার পাশাপাশি অবসর সময়ে ড্রাইভিং করো। শিক্ষিত মানুষ ড্রাইভিংয়ে এলে আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমবে। এও বলেছি, ড্রাইভিং বা ড্রাইভারি এ দেশে মর্যাদার কোনো কাজ নয়। তাই শিক্ষিত মানুষ এ পেশায় আসতে চান না। ইংল্যান্ড, আমেরিকা, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এমনকি ভারতের মতো দেশেও এ পেশায় শিক্ষিত লোকজন রয়েছে অনেক। সেখানে এ পেশার মর্যাদা আছে বলেই সবাই স্বাচ্ছন্দে এ কাজ করছে।

আমাদের দেশে একজন বেকার শিক্ষিত মানুষ না খেয়ে পথে পথে ঘোরে। চাকরি না পেয়ে ৫-১০ হাজার টাকার একটি অফিস সহকারীর চাকরিতে তুষ্ট থাকে, পক্ষান্তরে অনায়াসে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা সহজেই আয় করা যায় যে ড্রাইভিং পেশায়, সেখানে কেউ আসতে চায় না। সবাই ড্রাইভার বলে নাক সিটকায়। ড্রাইভারের কাছে কেউ মেয়েকে বিয়ে দিতে চায় না। এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আমি সেদিন আমার ছেলেকে পার্টটাইম ড্রাইভার হতে অনুরোধ করলে, সেও উল্টো বলল- ‘তুমিও তো অবসরে ড্রাইভার হতে পারো? তুমি এ কাজ করলে মানুষ আরো বেশি উদ্বুদ্ধ হবে। এ পেশার মর্যাদা অবশ্যই বাড়বে।’ ওর কথাই ঠিক। আমরা যারা সমাজের নেতৃস্থানীয়, তারা সবাই মিলে ড্রাইভিংকে মর্যাদাশীল করতে ভূমিকা রাখতে পারি। আমরা শিক্ষিত বেকারকে এ পেশায় সম্পৃক্ত করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে পারি।

সমপ্রতি রাজধানী ঢাকায় ‘উবার ট্যাক্সি সার্ভিস’ আমাকে বেশ আশাম্বিত করেছে। আমি নিজেই এ সার্ভিস নিচ্ছি। এতে আমি খুবই উদ্দীপ্ত বোধ করছি। এ সার্ভিসে এখন শিক্ষিত মানুষ যুক্ত হচ্ছেন। উবারের লক্ষ্য হচ্ছে প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষিত বেকার গোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করা, শহরগুলোতে চলাচল সুগম করা এবং যানজট ও বাযুদূষণ কমানো। যদিও উবার সার্ভিসের ব্যাপারে সরকারের যথেষ্ট আপত্তি ছিল। সরকার ভালো দিকটি বুঝতে পেরে উবারের কার্যক্রমে আর বাদ সাধছে না। আসলে ‘উবার’ নামের ‘অন-ডিমান্ড’ ট্যাক্সি সেবা বিশ্বের বড় শহরগুলোতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। বাংলাদেশেও তা সাড়া ফেলবে। শিক্ষিত মানুষ ড্রাইভিং পেশায় এলে কী লাভ। যারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পার করে, তারা একটু বেশিই বোধ-বিবেক শক্তিসম্পন্ন হয়। আইন মানার প্রবণতা তাদের অনেক বেশি। ড্রাইভিং যথেষ্ট জ্ঞানের সাথে করতে হয়। একটু এদিক সেদিক হলেই জানমালের ক্ষতি।

এ দেশে সড়ক দুর্ঘটনা স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক নয়, তা হচ্ছে মানবসৃষ্ট। সে হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা পরোক্ষভাবে হত্যারই শিকার। কিন’ হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার কাক্সিক্ষত উদ্যোগ নেই। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা না কমে জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলেছে। সড়ক দুর্ঘটনা, এ যেন অলঙ্ঘনীয় ব্যাপার; মৃত্যুদূত ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার মতো। ঘর থেকে বের হয়ে আবার ঘরে ফেরা যাবে কি? এমন সংশয় বরাবরই থেকে যায়। এ প্রশ্নের ইতিবাচক জবাব পাওয়াও কঠিন দেশে। তাই প্রতিদিন গণমাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি সড়ক দুর্ঘটনার অসংখ্য বিভৎস ছবি, দেখতে পাই স্বজন হারানোদের আহাজারি। আমাদের সড়ক যেন এখন মরণফাঁদ। এমন কোন দিন নেই, যেদিন অকালে প্রাণ ঝরছে না, প্রিয়জন হারানোর বেদনায় বাতাস ভারি হয়ে উঠছে না।এমন বেদনা বুকে ধারন করেই আমরা বেঁচে আছি।

দেশে যেভাবে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে তাতে, নিরাপদ সড়ক বলে আর কিছু আছে বলা যাবে না। প্রতিদিন এমন হত্যাকা- ঘটলেও সংশ্লিষ্টদের কাছে এটি গা-সওয়া হয়ে গেছে যেন। সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল থামাতে কার্যকর ও কঠোর পদক্ষেপ না থাকায়ই হয়তো সড়ক দুর্ঘটনার নামে ধারাবাহিক হত্যাকান্ড চলছে। এ অবস্থায় আজকাল আর কেউ ঘর থেকে বের হলে পৈত্রিক প্রাণটা নিয়ে ফের ঘরে ফিরতে পারবেন কিনা সে নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে কি? সড়ক দুর্ঘটনা প্রাকৃতিক নয়, মানবসৃষ্ট কারণ। তাহলে এমন মৃত্যুকে আমরা কেন খুন বলবো না? সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা পরোক্ষভাবে হত্যারই শিকার হন।

কিন্তু হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জনাকাক্ষিত প্রয়োগ নেই বাংলাদেশে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা না কমে জ্যামিতিক হারেই ঘটে চলেছে। এমন কোনো দিন নেই, যে দিন সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে না। বিগত এরশাদ সরকারের আমলে সড়ক দুর্ঘটনা অস্বাভাবিক বেড়ে গেলে সরকার দুর্ঘটনা সংঘটনকারী গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করেন। এতে চালকের দায়িত্বে অবহেলার কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় কারো মৃত্যু ঘটলে এজন্য চালককে নরহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করার বিধান রাখা হয়। কিন’ পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে পরে তা রহিত করতে বাধ্য হয় সরকার। এরপর থেকে বিভিন্ন সরকারকে পরিবহন শ্রমিকদের দাবি দাওয়ার কাছে প্রায় জিম্মি থাকতে দেখা যাচ্ছে।

এভাবে দুর্ঘটনা সংঘটনকারী চালকদের শাস্তি না হওয়া, ট্রাফিক আইন লংঘন, লাইসেন্সবিহীন ও অদক্ষ চালক কর্তৃক গাড়ি চালানো, আনফিট গাড়ি রাস্তায় নামানো, সড়ক যোগাযোগে অব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কারণে ইদানিং সড়ক দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। দুর্ঘটনার সাথে জড়িত চালকদের বিচারের কাঠগড়ায় নিয়ে আসার ঘটনা এদেশে বিরল। দেখা গেছে, প্রায় সব ক’টি দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেই চালকরা পার পেয়ে গেছে। কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি তাদের বিরুদ্ধে। উৎকোচ কিংবা অর্থ ভাগাভাগির মধ্যে দিয়েই সমাপ্তি ঘটেছে এসব ঘটনার।

সরকারি হিসাবে গত ১০ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গেছে ৩৪ হাজার ৯১৮ জন। প্রতি বছর মারা যায় ৩ হাজার ৪৯১ জন। থানায় মামলা হয়েছে এমন দুর্ঘটনার হিসাব নিয়ে পুলিশ এ তথ্য দিয়েছে। বেসরকারি হিসাবে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে ২০ হাজার ৩৪ জন। প্রতিদিন গড়ে মারা যায় প্রায় ৫৫ জন। পুলিশের দেয় তথ্য ও বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত তথ্যের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান থাকার কারণ হল, দুর্ঘটনার পর পুলিশকে ৬৭ ধরনের প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহ করে প্রতিবেদন জমা দিতে হয়। এ ঝামেলার কারণে অনেক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়টি পুলিশ রেকর্ডভুক্ত করে না।

সরকারি হিসাব মতে, ১৯৯৯ সালে ৪ হাজার ৯১৬ জন, ২০০০ সালে ৪ হাজার ৩৫৭ জন, ২০০১ সালে ৪ হাজার ৯১ জন, ২০০২ সালে ৪ হাজার ৯১৮ জন, ২০০৩ সালে ৪ হাজার ৭ ৪৯ জন, ২০০৪ সালে ৩ হাজার ৮২৮ জন, ২০০৫ সালে ৩ হাজার ৯৫৪ জন, ২০০৬ সালে ৩ হাজার ৭৯৪ জন, ২০০৭ সালে ৪ হাজার ৮৬৯ জন, ২০০৮ সালে ৪ হাজার ৪২৬ জন, ২০০৯ সালে ৪ হাজার ২৯৭ জন, ২০১০ সালে ৫ হাজার ৮০৩ জন, ২০১১ সালে ৩ হাজার ৬৮৮ জন, ২০১২ সালে ৫ হাজার ৯১১ জন, ২০১৩ সালে ৪ হাজার ৮৬৫ জন এবং ২০১৪সালে ৩ হাজার ৯৭৫ জন, ২০১৫ সালে ৮ হাজার ৬৪২ জন, ২০১৬ সালে ৭ হাজার ৪২৭ জন, ২০১৭ সালে ৮ হাজার ৬৯৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। ২০১৮ সালে ৪ হাজার ৫২২ জন । প্রতিবছরই এভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মরছে আর তা রোধ করা যাচ্ছে না কেন? অদক্ষ ও দুই নম্বরী লাইসেন্স প্রাপ্ত চালকগণই যে এসব দুর্ঘটনার জন্যে দায়ী তা বলাই বাহুল্য।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিকার কি নেই? দেশে সন্ত্রাস দমনে যদি বিশেষ র‌্যাব বাহিনী গঠন করা যায়, দুর্ঘটনা রোধে এ জাতীয় বাহিনী নয় কেন? এক হিসেবে দেখা গেছে, দেশে সন্ত্রাসীদের হাতে শতকরা ৩০ জন লোক মারা গেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় ৭০ জন। ৩০ জনের জীবনসহ অপরাপর জানমাল রক্ষায় সরকারের একটি বাহিনী থাকলে শতকরা ৭০ জনের জীবনসহ অসংখ্য আহত ও ডলারে কেনা পরিবহন রক্ষায় সরকার সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বিশেষ বাহিনী গঠন করতে কি পারে না? দেশের মানুষের জানমাল রক্ষা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। দুর্ঘটনা রোধে সরকারকে দেশের মানুষের স্বার্থে যথাসম্ভব দ্রুত ভাবতে হবে।

আইন না মানাই হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আইন মানতে বাধ্য করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশসহ চলমান প্রশাসন এ আইন প্রয়োগে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে তাদের ঢেলে সাজাতে হবে। দুর্ঘটনার অন্যতম কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চলাচল, ২. মোবাইল ফোন ব্যবহার, ৩. অতিরিক্ত যাত্রী এবং পণ্য পরিবহন, ৪. ট্রাফিক আইন না মানা, ৫. নিয়োজিতদের দায়িত্বে অবহেলা, ৬. চালকদের বেপরোয়া মনোভাব, অদক্ষতা ও অসতর্কতা এবং ৭. অরক্ষিত রেললাইন। আর এসব কারণে প্রতিদিনই ঘটছে হতাহতের ঘটনা। দুর্ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে, ঘটবেও। কেন তা রোধ করা যাচ্ছে না? আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় দেশে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এসব রুখতে হবে? যে কোনো মৃত্যুই দুঃখজনক। সে মৃত্যু যদি অকাল ও আকস্মিক হয়, তবে তা মেনে নেয়া আরও কঠিন। প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একের পর এক অকালমৃত্যু আমাদের শুধু প্রত্যক্ষই করতে হচ্ছে না, এ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক বিভীষিকাময় ও অরাজক পরিস্থিতিও মোকাবিলা করতে হচ্ছে, যা আমাদের কারও কাছেই কাম্য নয়। আমরা সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পরিবহন মালিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে সমন্বিত আন্তরিক, সচেতন, দৃঢ় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা আমরা আশা করি।

 

 

 

লেখক: সাংবাদিক, কলামিষ্ট, গবেষক। e-mail-newsstore13@gmail.com

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here