ডেস্ক রিপোর্ট::  বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। সেই অবরোধ চলাকালে সামান্য দূরে গাজীপুর মহানগরীর পানিশাইল এলাকায় ডরিন ফ্যাশন নামের একটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন।

এসময় দুই কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা, হাতাহাতি ও সবশেষে এলাকাবাসীর সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় উত্তেজিত শ্রমিক জিরানি বাজারের পাশেই অ্যামাজন নিটওয়্যার নামের একটি কারখানায় অগ্নিসংযোগ করেছে। দুপুর আড়াইটার দিকে রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

কারখানা শ্রমিক, এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, গত দুইদিনের মতো আজ সোমবার (১৮ নভেম্বর) বেক্সিমকোর শ্রমিকরা সকাল থেকে চক্রবর্তী এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। ওই কারখানার কারণে আশপাশের অন্তত ২০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া গত ১ নভেম্বর থেকে পানিশাইল এলাকার ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। গতকাল রোববার কারখানা খুলে দেওয়া হলেও দুপুরের পর ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।

ডরিন ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকরা সোমাবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে দেখেন ফের তাদের কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কারখানার সামনে নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই নোটিশ দেখে ক্ষুব্ধ হন কারখানার শ্রমিকরা। এসময় কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভে শুরু করেন।

এক পর্যায়ে তারা চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের জিরানী এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। একই সময়ে একই সড়কের পৃথক স্থানে বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকরাও অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিল।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডরিন ফ্যাশন ও বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে।

আহতরা স্থানীয় ক্লিনিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এসময়ে শ্রমিকরা পানিশাইল ও কলতাসুতি এলাকায় ঢুকে পড়ে এলাকার লোকজনদেরও মারধর করে। এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া করে। বেশ কিছু সময় ত্রিমুখী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

এ সময়ে ডরিন ফ্যাশন ও বেক্সিমকোর কিছু উশৃঙ্খল শ্রমিক পূর্ব কলতাসুতি এলাকার অ্যামাজন নিট ওয়্যার নামের একটি কারখানায় অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তবে ঘটনাস্থলে উপ্তত পরিস্থিতি বিরাজ করায় প্রায় এক ঘণ্টা হয়ে গেলেও দমকল বাহিনীর কর্মীরা ঘটনাস্থালে পৌঁছায়নি।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, খবর পেয়ে কাশিমপুর দমকল বাহিনীর দুইটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে। আগুন প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।

কাশিমপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হানিফ বলেন, কারখানার আগুন জ্বলছে। দমকল বাহিনী এক ঘণ্টা হয়ে গেলেও সেখানে আসেনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here