আজ বিশ্ব বন্ধু দিবসস্টাফ রিপোর্টার :: পৃথিবীর নিষ্পাপ সম্পর্কের নাম ‘বন্ধুত্ব’। বন্ধু হচ্ছে চাঁদের মতো। চাঁদনী রাতে যেখানেই যাবো, সঙ্গে যাবে চাঁদ। যতদূরেই হোক, দূর আকাশ থেকে জানান দেবে ‘আমি আছি’। জীবনে বন্ধু হচ্ছে তৃষ্ণায় এক আজলা শীতল জলের মতো। সৃষ্টির শুরুতে বন্ধুত্ব ছিল, এখনও আছে, থাকবে অনন্তকাল। আত্মার আত্মীয় বন্ধুর সাথে এই সম্পর্ক প্রতিদিন সমান গুরুত্বের হলেও বন্ধুকে খানিকটা আলাদা করে মূল্যায়ন করার জন্য পালিত হয়ে আসছে ‘বন্ধু দিবস’। আজ বিশ্ব বন্ধু দিবস।
এখন ‘বন্ধু’ শব্দটির বদলে মানুষ ইংরেজি ‘ফ্রেন্ড’ শব্দটিতেই বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবুও ‘বন্ধু’ শব্দটির মাঝে যে প্রাণ-আবেদন আছে তা তুলনারহিত। আত্মার কাছাকাছি যে বাস করে, সে আত্মার আত্মীয়, বন্ধু বা স্বজন। বন্ধু শব্দের মাঝে মিশে আছে যেন নির্ভরতা আর বিশ্বাস। বন্ধু আর বন্ধন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। পোক্ত বন্ধনের ভিত্তিই বন্ধুত্ব।একটাই কথা আছে বাংলাতে, মুখ আর বুক বলে একসাথে, সে হলো বন্ধু, বন্ধু আমার। জাতের বিচার করা সে জানে না, কে গরিব কে আমির সে মানে না…। বন্ধুর জন্য বন্ধুর মর্মবোধ এমত যে: হাল ছেড়ো না বন্ধু বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে, দেখা হবে তোমার-আমার অন্যদিনের ভোরে।’
প্রতি বছরের আগস্ট মাসের প্রথম রবিবার পালিত হয় বিশ্ব বন্ধু দিবস। এদিন বন্ধুরা একে অপরকে উপহার দেয়। অথবা সবাই মিলে কিছুটা বাড়তি সময় পার করে উদযাপন করা হয় দিনটি।
তবে ঠিক কবে থেকে বন্ধু দিবস পালন করা হচ্ছে তার সঠিক ইতিহাস নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। ধারণা করা যায় ঊনবিংশ শতাব্দীর ত্রিশ থেকে চল্লিশের দশকের মধ্যবর্তী সময়েই বন্ধু দিবস পালন শুরু হয়। ওয়েবসাইট ঘেঁটে জানা যায়, ১৯৫৮ সালের ২০ জুলাই ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেডের প্রতিষ্ঠাতা ড. আর্তেমিও ব্রেঞ্চো বন্ধুদের সঙ্গে প্যারাগুয়ের পুয়ের্তো পিনাসকোতে এক নৈশভোজে প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সে রাতেই ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেড প্রতিষ্ঠা পায়।
এই প্রতিষ্ঠানটি ৩০ জুলাই বিশ্বব্যাপী বন্ধু দিবস পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব পাঠায়। প্রায় পাঁচ যুগ পর ২০১১ সালের ২৭ জুলাই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৩০ জুলাইকে বিশ্ব বন্ধু দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
অন্য একটি ওয়েবসাইটের তথ্যমতে প্রথম দিকে বিভিন্ন কার্ড তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডশিপ ডে’র চল শুরু করে। পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সঙ্গে এই দিন উদযাপন বিশাল আকার ধারণ করে। ধারণা করা হয় ১৯৩৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এই দিন উদযাপন শুরু হয়। পরে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে যায়। ১৯৩৫ সালে আমেরিকার সরকার এক ব্যক্তিকে হত্যা করে। দিনটি ছিল আগস্টের প্রথম শনিবার।
হত্যার প্রতিবাদে পরের দিন ওই ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। সে সময় বিষয়টি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এরপর থেকে জীবনের নানা ক্ষেত্রে বন্ধুত্বের অবদান আর তাদের প্রতি সম্মান জানানোর লক্ষ্যেই আমেরিকান কংগ্রেস ১৯৩৫ সালে আইন করে আগস্ট মাসের প্রথম রবিবারকে বিশ্ব বন্ধু দিবস ঘোষণা করে।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here