রাহাদুল হাসান রাতুল :: যৌবনের লাল টুকটুকে রূপ সৌন্দর্য হারিয়ে জীর্ণ শীর্ণ হয়ে আজো চিঠির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে লাল রঙের সেই ডাকবাক্স গুলো। একসময়কার একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম এই ডাকবাক্স গুলো যেনো আজ সব ব্যস্ততা হারিয়ে বার্ধক্যের ছাপ নিয়ে ঠায় দাড়িয়ে আছে কেবলই ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে।

এই শহরে এখনো প্রেমিক-প্রেমিকা আছে, গ্রামে পরিবার রেখে জীবিকানির্বাহের জন্য শহরে আসা সেই মানুষটাও আছে, আছে দূর প্রবাসে থাকা কিংবা শহরে বিদ্যাঅর্জনে আসা ছেলের জন্য অপেক্ষার প্রহর গোনা সেই মা-বাবাও, নেই শুধু একসময়কার হাজারো আবেগ মিশ্রিত সেই চিঠির লাইন গুলো।

কেউ এখন আর অপেক্ষায় থাকেনা ডাকপিয়নের সাইকেলের সেই কলিং বেলের। জমিয়ে রাখা সুখ-দুঃখের সেই স্মৃতিগুলোও কেউ আর কলমের ছোঁয়ায় ফুটিয়ে তুলেনা সাদা কিংবা ফুল-লতাপাতার নকশা করা সেই রঙিন কাগজে৷

মাসের পর মাস অপেক্ষায় থাকা আপন জনের কাছে লিখা চিঠি নিয়ে কেউ আর সেই লালবাক্স গুলোকে স্বরণ করেনা একটিবারের জন্যও।

জ্ঞান-বিজ্ঞানের আধুনিকায় কিংবা তথ্য প্রযুক্তির বদৌলতে পাওয়া বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দৌরাত্ম্যের কারণে প্রয়োজন ফুরিয়ে এসেছে এই ডাকবাক্স গুলোর। তাইতো জীর্ণশীর্ণ মলিন চেহারায় শহরের ব্যস্ত সড়ক কিংবা ডাকঘরের পাশে অতীতের রূপ-জৌলুস হারিয়ে কেবলই কালের সাক্ষী হয়ে, অবহেলায় অযত্নে পড়ে রয়েছে লাল রঙের সেই ডাকবাক্স গুলো। ধুলোবালিময় এই ডাকবাক্স গুলো এখনো নিজের সবটুকু দিয়ে প্রেরকের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।

এমনই একটি ডাকবাক্সের দেখা মিলে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে । প্রতিদিনই বাক্সগুলোর পাশ দিয়ে হাজারো মানুষের পদচারণা হলেও একটিবারের জন্যও কেউ ফিরে তাকানোর প্রয়োজনবোধ করেনা ডাকবাক্সটির দিকে।

চারপাশের এই আধুনিকতার ভিড়েও অল্প হলেও যেনো আমরা ফিরে যেতে পারি পুরোনো সেই চিঠির যুগে। মুখে বলতে না পারা কথা গুলো যেনো কাগজে লিখে পাঠাতে পারি প্রিয়জনের ঠিকানায়। আন্তজার্তিক চিঠি দিবস উপলক্ষে এই মোদের প্রত্যাশা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here