ডেস্ক রিপোর্ট::  ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ওয়াশিংটন সফরে বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসনের গুরুত্বের দিকটি তুলে ধরা হবে। ওয়াশিংটনের এমন কিছু করা উচিত হবে না, যাতে আওয়ামী লীগ সরকার চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ে- নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে এ বার্তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা।

ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে আনন্দবাজার দাবি করেছে, বাংলাদেশ নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কথা বলার পক্ষে নয়াদিল্লি। যদিও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, অন্য দেশের ভোটের বিষয়ে নাক গলানোর কিছু নেই।

কিন্তু ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের দপ্তর থেকে ঢাকাকে জানানো হয়েছে, ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসনের গুরুত্বের দিকটি নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ওয়াশিংটন সফরে তুলে ধরা হবে।

নয়াদিল্লি আমেরিকাকে বলতে চায়, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের গুরুত্ব যথেষ্ট। সেখানে এখন এমন কিছু করা বাঞ্ছনীয় নয়, যাতে সে দেশে মৌলবাদী, কট্টরপন্থী, সন্ত্রাসবাদীদের কাছে ইতিবাচক বার্তা যায়। সম্প্রতি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে ঘিরে আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেছে। সেখানে ভারতের অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ওই অঞ্চলের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি উদার, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভূক্তিমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথাই বলা হয়েছে।

গত মাসে জাপানের হিরোশিমায় জি-৭ শীর্ষ বৈঠকে আমন্ত্রিত রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে গিয়েছিলেন মোদি। তখনই বাংলাদেশ প্রসঙ্গ তোলার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে তা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার।

পশ্চিমবঙ্গের এই পত্রিকা দাবি করেছে, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের আগে আমেরিকার ক্রমবর্ধমান চাপ নিয়ে শেখ হাসিনা সরকার নয়াদিল্লির কাছে ‘ঘরোয়াভাবে উদ্বেগ প্রকাশ’ করেছে। বাংলাদেশের অভিযোগ, নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের যথেষ্ট উদ্যোগ ও চিন্তাভাবনা রয়েছে। কিন্তু আমেরিকা ও আংশিকভাবে জাপানের পক্ষ থেকে যেভাবে অতিসক্রিয়তা দেখানো হচ্ছে, তা যথেষ্ট অস্বস্তির।

এই মুহূর্তে নতুন মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে বাংলাদেশ সরগরম। শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্য পৃথক ভিসানীতি ঘোষণা করেছে বাইডেন প্রশাসন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ করার লক্ষ্যে এই নতুন ভিসানীতি। নির্বাচনকে যারা বানচাল করার চেষ্টা করবেন, তারা আমেরিকায় প্রবেশাধিকার পাবেন না।

আনন্দবাজার জানায়, মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশের রাজনীতিতে নাক গলাতেই পৃথক ভিসানীতি গ্রহণ করেছে। এই পদক্ষেপের আসল বক্তব্য হলো, শেখ হাসিনার সময়ে হওয়া নির্বাচনগুলো অবাধ ছিল না। আওয়ামী লীগের বক্তব্য, এর ফলে ভোটের আগে বিরোধী দলগুলো বাড়তি সুযোগ পেয়েছে। বিরোধী দলগুলো বহু দিন ধরেই দাবি করছে, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোট হোক। আর এ দাবির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন আছে।

বাংলাদেশের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের নাগরিকেরা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও ভোটাধিকারের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। ভোট কারচুপির মাধ্যমে জনগণের রায় কেড়ে নিয়ে কোনও সরকারের ক্ষমতায় থাকার নজির নেই। সরকার সব শান্তিপূর্ণ ও বৈধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য সভা-সমাবেশের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেয়’।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here