মো: ইকবাল হোসেন, (কয়রা) খুলনা প্রতিনিধি ::
সুন্দরবন মায়ের মতন। এ বন উপকূলীয় অঞ্চলকে জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে। অথচ খুলনা দক্ষিণাঞ্চলের কয়রা উপজেলার উপকূলীয় সুন্দরবন নেতৃস্থানীয় অসাধু চক্রের হুমকির মুখোমুখি। স্থানীয় বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অসাধু চক্র বিষ দিয়ে মাছ সংগ্রহ, হরিণ শিকার, অবৈধভাবে সুন্দরী গাছ ও গোলপাতা আহরণ বেড়েই চলেছে। বন রক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সুন্দরবনকে নিয়ে রমরমা ব্যবসায়ে মেতে উঠেছে ওই অসাধু চক্র।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি বছরে চোরা হরিণ শিকারী গ্রেফতার হয়েছে শতাধিক। আর বিষ দিয়ে মাছ সংগ্রহকালে আটক হয়েছে ২৬ জন এবং নিষিদ্ধ সময়ে বনজ সম্পদ লুণ্ঠনে ৬০টি নৌকা জব্দ করা হয়। মামলা হয়েছে অর্ধশতাধিক। রাতের আঁধারে দেউলিয়া বাজার করাত কলে সুন্দরবনের গাছ কাটতে গিয়ে হাতে জখম হয়েছে এক শ্রমিকের। সুশীল সমাজের দাবি, প্রশাসনের তৎপরতা ও অভিযান স্থানীয় বন কর্মকর্তা ও অসাধু চক্রের ব্যবসার তুলনায় নিতান্তই কম। সুন্দরবনের সম্পদ অবৈধ আহরণ এবং ব্যবসা করে হয়েছেন তারা লাখোপতি। এদিকে সরকার হারাচ্ছে বহু রাজস্ব।
বাংলাদেশ সবুজ আন্দোলন কয়রা উপজেলার সমন্বয়ক ওবায়দুল কবির সম্রাট বলেন, সুন্দরবন উজাড়ের মুলে রয়েছে বন বিভাগের কিছু দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তা এবং প্রশাসনের নীরব ভুমিকা। প্রশাসনের তৎপরতা বৃদ্ধি এবং বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের সচেতনতাই আমাদের সুন্দরবন রক্ষা করতে পারে।
কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ.বি.এম.এস দোহা (বিপিএম) জানান, বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে রক্ষা করতে সাড়াশি অভিযান চালাচ্ছি। যতদ্রুত সম্ভব চোরা হরিণ শিকারী সহ অসাধু সিন্ডিকেটকে নির্মুল করা হবে। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সকলের সহায়তা কামনা করছি।
খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মহসিন হোসেন বলেন, দুষ্কৃতকারীদের নির্মূল করতে বন বিভাগের অভিযান চলমান রয়েছে। অচিরেই অসাধু চক্রকে আইনের আওতায় এনে সুন্দরবনের সম্পদ ও জীব-বৈচিত্রকে সংরক্ষণে আশু পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here