এনামুল হক কাশেমী, বান্দরবান প্রতিনিধি :: বান্দরবানে আবারও হাই হাই কোম্পানীর আবিস্কার ঘটেছে। কথিত শিশু কল্যাণ তহবিল নামীয় একটি বেসরকারি সংস্থা প্রকাশ্যে একটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে জনবল নিয়োগের অজুহাতে প্রার্থীদের কাছ থেকে ৩০০ থেকে ৫০০ টকাহারে খামের ভেতর টাকা বা ব্যাংক ড্রাফট চাওয়া হয়েছে। এই বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে সচেতন মহল থেকে। কিন্তু প্রশাসন,পুলিশ এবং সরকারি বিশেষ সংস্থাগুলোর মাঠকর্মকর্তারা এসব বিষয়ে বরাবরের মত নির্বিকার থাকায় ওই এনজিও’র দাপট ক্রমেই বাড়ছে বলে স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, সম্পুর্ণ সিংগাপুর দাতা সংস্থাও বিশ্ব শিশু কেয়ার ফাউন্ডেশন নামে এই সংস্থার আওতায় বান্দরবান, রাংগামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম জেলার প্রত্যেক সরকারি প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রমে সহায়তার কাজে প্রশিক্ষক এবং সহযোগী শিক্ষক/শিক্ষিকা নিয়োগের জন্য আবেদনপত্র আহবান করা হয়েছে গত ২৩সেপ্টেম্বর প্রথম আলো-তে প্রকাশিত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে। প্রশিক্ষকদের মাসিক বেতন ২০ হাজার টাকা এবং শিক্ষক/শিক্ষাকাদের মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা হারে বলে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে লেখা রয়েছে। বিজ্ঞাপনদাতা হচ্ছেন- শৈ প্রু অং, জোনাল ম্যানেজার, বান্দরবান সদর, বান্দরবান। এই ঠিকানায় আবেদনপত্র পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ওই অফিসের বিস্তারিত কোন ঠিকানা এবং মোবাইল নাম্বারও নেই বিজ্ঞপ্তিতে। আগামী ৪ অক্টোবর আবেদন পাঠনোর শেষ তারিখ উল্লেখ রয়েছে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে।
বান্দরবাব জেলায় অতীতে ১০/১২টি বেসরকারি হাই হাই কোম্পানী বা এনজিও এভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পলাতক থাকার বিষয়ে নজির রয়েছে। বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়ে লুটপাট করে ছটকে পড়ে এনজিওগুলো। তবে ৪টি এনজিও’র বিরুদ্ধে তাদের প্রতারনার বিষয়ে থানা ও আদালতে মামলা টুকে দিয়েছেন প্রতারিত লোকজন। এ ধরেনের ২টি মামলা বান্দরবান জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চলমান রয়েছে। একটি এনজিও গ্রাহকদের কাছে ৫০ শতাংশ অর্থও ফেরত প্রদান করতে বাধ্য হয়েছেন আদালতের নির্দেশে।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তাঁর অফিসের জানা নেই। ওই সংস্থা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সাথে কোন যেগোযোগই করেনি।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক বলেন, শিশু কল্যাণ তহবিল নামের এনজিও সংস্থার বিষয়ে নজরে আনা হয়েছে, পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য-পার্বত্য জেলাগুলোতে যেকোন এনজিও’র কার্যক্রম বা নিয়োগের ক্ষেত্রে পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং জেলা প্রশাসনের পুর্বানুমোদান গ্রহণে বাধ্যবাধকতা থাকা সত্বেও তা না করেই শিশু কল্যাণ তহবিল নামীয় এনজিওটি প্রকাশ্যে কিভাবে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জনবল নিয়োগের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তা ভাবীয়ে তুলেছে বান্দরবানের সচেতন নাগরিকদের।