ইয়ানূর রহমান, যশোর প্রতিনিধি ::

যশোরের অভয়নগরে সরিষাক্ষেত থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত লাশের পরিচয় মিলেছে। নিহত যুবকের নাম ফরিদ গাজী(১৯) পিতা মৃত আফিল উদ্দীন গাজী, মাতা আম্বিয়া বেগম। তিনি উপজেলা গুয়াখোলা শাহীবাগ সংলগ্ন বস্তির বাসিন্দা। লাশের পরিচয় শনাক্ত করার পর আজ সোমবার সকাল ১১ টায় ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করেছে।
আসামীরা হলেন নড়াইল সদর থানার যদুনাথপুর গ্রামের সাখাওয়াত মোল্যার ছেলে শান্ত(২১) ও একই গ্রামের ছবুর মোল্যার ছেলে সাকিব মোল্যা(২১)। নিহত ফরিদ ও গ্রেফতার হওয়া আসামীরা তিন জন মিলে নওয়াপাড়ার বেঙ্গল মিলের পাশে একটি রুম ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো।
আসমীদের আটকের পর পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নিহত ফরিদ গাজীর নামে ধর্ষণ মামলা রয়েছে। সে জেলে থাকা কালীন ওই দুই আসামীর সাথে পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে তিন জন একটি রুম ভাড়া নিয়ে নওয়াপাড়া বেঙ্গল মিল এলাকায় বসবাস করতো। তারা জাহাজের স্কট এর কাজ করতো। কখনো অন্যান্য কাজও করতো। মাঝে মাঝে ছিচকে চুরি করতো। ফরিদ ওই দুই বন্ধুর কিছু টাকা আত্মসাত করে। আসামীরা দুইজন মিলে ঘটনার দিন সন্ধ্যা রাতে স্যালো ম্যশিন চুরির লোভ দেখিয়ে ফরিদকে ভৈরব ব্রিজের কাছে এনে জবাই করে ও গলায় চাকু ঢুকিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায়। পরে আসামীদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক বাসার পাশ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদি হয়ে থানায় অভিযোগ করে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবি ও থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে আসামী আটক করে। পরে মামলা হয়। মামলা নং- ১৩ তারিখ ১৬/১/২৩।
উল্লেখ্য রবিবার দুপুর ২ টায় ভৈরব ব্রীজের পাশে দক্ষিন দেয়াপাড়া গ্রামে মাটি কাটা শ্রমিকেরা বালির ডিপোর ওপর থেকে ফরিদের গলাকাটা লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে বিকাল ৪ টার সময় লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। রাতে লাশের আঙ্গুলের ছাপ শন্ক্ত করণ করার চেষ্টা করে। এতে ব্যর্থ হয়ে লাশের পকেটে একটি চিরকুটে পাওয়া মোবাইল নং ধরে লাশের পরিচয় শনাক্ত এবং আসামী গ্রেফতার হয়।
নিহত ফরিদ গাজীর বোন আসমা বেগম জানান, তার ভাই জাহাজে কাজ করতো। কখনো কখনো অন্য কাজও করতো। ফরিদ নওয়াপাড়া বেঙ্গল টেক্সটাইল মিলের পাশে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতো। ওই বাসায় তার আরো দুই বন্ধু ভাড়া থাকতো। টাকা নিয়ে ওদের মধ্যে বিবাদ ছিলো। এ কারনে দুই বন্ধু তার ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে গলা কেটে হত্যা করেছে৷
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here