ঢাকা : অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বিতর্কিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ৯ টায় চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ এবং ইউএসটিআর এর উপপরিচালক ওয়েনডি কাটলার চুক্তিটি সই করেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট (টিফা) নামে চুক্তি সইয়ের প্রস্তাব দেয়। টিফার প্রথম খসড়ায় ১৩ ধারা এবং নয়টি প্রস্তাবনা ছিল। ২০০৫ সালে সংশোধিত আকারে দ্বিতীয় দফায় টিফা সইয়ের প্রস্তাব আসে। ওই সময় খসড়ায় ৭ ধারা ও ১৯ প্রস্তাবনা ছিল।
এতে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে বিনিয়োগ বাতিল করার শর্ত জুড়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর টিফা থেকে টিকফায় পরিণত হয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক এ চুক্তির নাম। গত ১৭ জুন বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় এটি অনুমোদিত হয়।
এর বহু আগে থেকেই দেশের বাম রাজনীতিক বলয়সহ বিভিন্ন মহল থেকে এ চুক্তিকে দেশবিরোধী আখ্যা দিয়ে এর বিরোধীতা করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো বিরোধীতার তোয়াক্কা না করে চুক্তিটি স্বাক্ষর করলো সরকার।
এ চুক্তিটির মাধ্যমে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বাড়বে সরকারের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য দেওয়া হলেও অনুসন্ধানে জানা গেছে এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান, ইরাক, শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের যে ৫০টি রাষ্ট্রের সঙ্গে এ চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছে সেসব দেশের কোনোটির সঙ্গেই বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়েনি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) স্বাক্ষরিত হওয়াকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছে প্রধান বিরোধী বিএনপি।
রাতে দলের সহসভাপতি ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য-অর্থনৈতিক-কারিগরি-সামরিক ও রাজনৈতকি সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। দুই দেশের এই সম্পর্কের উন্নয়নে যেকোনো পদক্ষেপকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখি।
তিনি বলেন, পারস্পারিক লাভের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার বহুমুখী সর্ম্পককে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সকল পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই সম্পর্ক আরো নিবিড় করতে চায়।