স্টাফ রিপোর্টার :: বাংলাদেশে এখনো অপুষ্টিতে ভুগছে ২ কোটি ১০ লাখ মানুষ। অর্থাৎ প্রতি ৮ জনের মধ্যে ১ জন পাচ্ছেন না পুষ্টিকর খাবার। এছাড়া ৩১ শতাংশ শিশুর শারীরিক বিকাশ ঠিকমতো হচ্ছে না।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডবিস্নউএফপি) ও বাংলাদেশ সরকারের চালানো এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
এতে বলা হচ্ছে, পুষ্টিকর খাবার বলতে বোঝায় প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যেন ৬ ধরনের খাবার থাকে অর্থাৎ শর্করা, আমিষ, ভিটামিন, খনিজ, পানি ও চর্বি থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় মানুষ এখনো অতিরিক্ত পরিমাণে ভাত ও অপর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান-সংবলিত খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল। ফলে অন্য যেসব পুষ্টিকর খাবার আছে যেমন,শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল এগুলো খাওয়ার ব্যাপারে খুব একটা জোর দেন না।
গবেষণায় জানা গেছে, দরিদ্রতার পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে মানুষের সচেতনতার অভাব এবং নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্যতার অভাব এই পুষ্টিহীনতার প্রধান কারণ। কারণ অনেকে মাছ, মাংস, শাকসবজি, ফলমূলের মতো পুষ্টিকর খাবার টাকার অভাবে কিনতে পারছেন না। আবার অনেকের এসব খাবার কেনার ক্ষমতা আছে ঠিকই, কিন্তু তারা জানেন না কোন খাবারগুলো কী পরিমাণে খেতে হবে। গড়ে একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের দিনে ২ হাজার ১০০ কিলোক্যালোরি প্রয়োজন। তবে দেখা যাচ্ছে, মানুষ ৩-৪ বেলা পেট ভরে খাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু শরীর প্রয়োজনীয় ক্যালরি পাচ্ছে না। ফলে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে মানুষ।
ডবিস্নউএফপির তনিমা শারমিন বলেন, পেট ভরে শর্করা খেলেও সেখানে যদি অন্যান্য পুষ্টি উপাদান না থাকে তাহলে সেটাও পুষ্টিহীনতা। খাদ্যে ভেজালের আতঙ্কে অনেকে জেনে বুঝেও পুষ্টিকর খাবার এড়িয়ে চলেন। এছাড়া বাংলাদেশে যে উপায়ে রান্না করা হয়, সে কারণেও খাবারের পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।
এদিকে সরকারি হিসাবমতে, বাংলাদেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে যে ১১.৯০ ভাগ জনগোষ্ঠী রয়েছে তারাই মূলত পুষ্টিহীনতায় ভোগেন বেশি। তবে ক্রয়ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও সচেতনতার অভাবে পুষ্টিহীনতায় ভুগছে একটি বড় জনগোষ্ঠী।
পুষ্টিবিদদের মতে, একেক বয়সে পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা একেক রকম থাকে। এর মধ্যে বয়ঃসন্ধিকালে এবং গর্ভধারণের সময় নারীদের পুষ্টির চাহিদা তুলনামূলক বেশি থাকে। তবে বাংলাদেশে মা ও শিশুর পুষ্টির দিকটি যেভাবে নজরে রাখা হয়, বয়ঃসন্ধিকালীন ছেলে-মেয়ের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর বিষয়টি অধিকাংশ ক্ষেত্রে যথাযথ গুরুত্ব পায় না।
এছাড়া প্রবীণ জনগোষ্ঠীর পুষ্টির দিকটিও অবহেলিত বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।