মালিক উজ জামান, যশোর প্রতিনিধি ::
সম্প্রতি শেষ হওয়া অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয়ক্রিকেটে খুলনা বিভাগের হয়ে নজরকাড়া পারফরম্যান্স করে যশোরের আজিজুল হাকিম তামিম। সেই পারফরম্যান্সে সুযোগ মেলে অনূর্ধ্ব-১৬ দলের প্রাথমিক ক্যাম্পে। ক্যাম্পের খেলোয়াড় নিয়ে অনুষ্ঠিত চ্যালেঞ্জ কাপে একমাত্র ম্যাচে সেঞ্চুরি করে যশোর শিক্ষাবোর্ড সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র তামিম। ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে জায়গা হয়েছে অফ স্পিনেও ঝলক দেখানো তামিমের। এই কিশোর এবার বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব- ১৬ দলের হয়ে অবশেষে ভারতে গেলো ২৫ জুলাই। ভারত সফর নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত তামিম।
দুইটি চার দিনের ও তিনটি একদিনের ম্যাচ খেলতে সোমবার (২৫ জুলাই) ভারতের আসামের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দল। আসাম ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের অনূর্ধ্ব-১৬ দলের বিপক্ষে ম্যাচ গুলো হবে। গত ১৫ জুলাই থেকে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) শুরু হয় অনূর্ধ্ব-১৬ দলের ক্যাম্প। তামিম যাওয়ার আগে জানায়, এই পর্যায়ে ভালো করলে সুযোগ মিলতে পারে বয়সভিত্তিকের সবচেয়ে স্বীকৃত ও সমাদৃত অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। সে লক্ষ্যেই নিজেকে প্রস্তুত করা হয়। ধাপে ধাপে
এগোতে চাই জাতীয় দলের পথে।
সে আরও জানায়, যেহেতু অনূর্ধ্ব-১৬ এর পরেই অনূর্ধ্ব-১৯ এর ধাপ। সে কারণে আমি নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করতে চাই, নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে পরের ধাপে জায়গা নিশ্চিত করতে চাই। ব্যাটিং, বোলিং সব বিভাগেই নিজেকে আরও উন্নতি করার লক্ষ্যেই অনুশীলন করছি। এখন মাঠে ভালো খেলার চেষ্টা থাকবে। দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার উত্তেজনা না লুকিয়ে যোগ করে, ‘দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছি, এটা অন্য রকম ভালো লাগার, গর্বের ব্যাপার।
আমার প্রথম বিদেশ সফর, রোমাঞ্চিত অবশ্যই। এর আগে দেশে খেলেছি, প্রতিপক্ষ অনেকটা সমমানের ছিল। তবে এবার যেহেতু বিদেশের মাটিতে, প্রতিপক্ষ কঠিনও হতে পারে। ওখানে খেলাটা আমার জন্য একটা বড় অর্জন, অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। চেষ্টা করবো ভালো খেলতে, নিজের সেরাটা দিতে।’ সাম্প্রতিক সময়ে ভালো পারফরমায়ন্সের পুরষ্কার হিসেবে প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে গেছে তামিম। তাও দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে। তামিম যশোর শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা মোড়ের মুহাম্মদ হুসাইনের পুত্র তার মা সুলতানা পারভীন।
এই দলের স্ট্যান্ড বাই তালিকায় আছে যশোরের আর এক ক্রিকেটার বাঁহাতি পেসার রাহুল হোসেন। সেটি ভিন্ন প্রসঙ্গ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের যশোর জেলা কোচ আজিমুল হক আজিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কিশোর অলরাউন্ডার ক্রিকেটার তামিমের খালাতো ভাই আমজাদ হোসেন জানান ৫ ওয়াক্ত নামাজী বিধায় সে ছবি তুলাতে তার অপছন্দ। একারনে তার ফেসবুক একাউন্ট নেই। সে পবিত্র রমজানে এতেকাফে থাকে। এছাড়া রোযা রাখা তার অভ্যাস। সে রোযা রেখেই খেলাধূলা বা প্রশিক্ষনে অংশ গ্রহন করে। এতে তার কোন সমস্যা হয়না। তবে সে দারুন প্রতিভাবান অলরাউন্ডার। একই সাথে ব্যাটিং ওপেনিং করে। বাম হাতি এই কিশোর মাঠের চারিদিকে পিটিয়ে শর্টস খেলতে পছন্দ করে। একই সাথে ডানহাতি অফস্পিনার। অফব্রেক বোলার। তবে বলের গতি বেশ। শীঘ্রই মূল জাতীয় দলে তার খেলার ব্যাপারে আমরা পারিবারিকভাবে আশাবাদী।
তামিমের ফুফাতো ভাই ফাহিম জানায়, কিছুটা রিজার্ভ মুডের তামিম। মায়ের হাতের খাবার তার পছন্দের। একারনে বাইরে তার খাওয়া দাওয়ায় কিছুটা সমস্যা হয়। সে ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা। গায়ের রং শ্যামলা। তাছাড়া কঠোর পরিশ্রম করায় তার গায়ের রং এখন কালো ধারন করেছে। এতে সে মোটেও চিন্তিত নয়। ও স্পিন ও ফার্স্ট দুই ডিপার্টমেন্টেই ভালো।
যশোর জেলা অনূর্দ্ধ-১৪ এর অধিনায়ক ছিল। যশোর তার সময়েই এই বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ওরা দুই ভাই দুই বোন আপন। ওর বড় ভাই আবু হুরাইরা হাসিব, বড় বোন আয়শা সিদ্দীকা হাসনাহেনা, ছোটটির নাম খাদিজা তুল কোবরা ওরফে রাত্রী। নিজ এলাকায় খুবই জনপ্রিয় তামিম। তাকে সকলে স্নেহ করে।