অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, গ্রামীণ পর্যায়ে ক্ষুদ্র ঋণগ্রহণকারীরা দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠতে পারছে না। এর মাধ্যমে অতিদরিদ্রদের কোনো উপকার হচ্ছে না, অপেক্ষাকৃত কম দরিদ্ররা কিছুটা উপকার পাচ্ছে।

বুধবার সকালে ২১ বছর পূর্তি উপলক্ষে নিজস্ব ভবনে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ‘বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ: চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যত নির্দেশনা’ শীর্ষক সেমিনারের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। পিকেএসএফ’র চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান প্রফেসর নুরুল ইসলাম। বক্তৃতা করেন অর্থনীতিবিদ এম সাইদুজ্জামান, এম এম আকাশ, প্রফেসর এম এ বাকী খলিলী।

অর্থমন্ত্রী  বলেন, ক্ষুদ্রঋণ দারিদ্র্য নিরসনের একটি অস্ত্র। তবে গরিবানার কতটুকু সমাধান হয়েছে সেটা ভাববার বিষয়।

তিনি বলেন, ক্ষুদ্রঋণের অনেক দোষের মধ্যে কিছু ভালোও রয়েছে। এর মাধ্যমে কিছু লোক দারিদ্র্য সীমার ঊর্ধ্বে আসছে, গ্রামীণ পর্যায়ে দুর্বল প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে মহিলারা শক্তিশালী হচ্ছে এবং একটা সামাজিক বিবর্তন আসছে। উন্নয়নে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মহিলাদের সমাজে আত্তীকরণ অন্যমত প্রধান দুটি উপাদান যা ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের মাধ্যমে অর্জন সম্ভব হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্রঋণ অর্থনৈতিক জীবনে বিরাট ভূমিকা পালন করছে। দেশের ১৫ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় পাঁচ কোটি গরিব।

মন্ত্রী বলেন, ১৯৮৬ সালে ১০ শতাংশ ঋণ সরবরাহের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ পেতো ৪ শতাংশ । বর্তমানে প্রায় ২২ হাজার কোটিরও বেশি ক্ষুদ্রঋণ দেয়া হচ্ছে, যা কৃষি ঋণের দ্বিগুণ।

গ্রামীণ ব্যাংক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক প্রথম ব্যক্তিউদ্যোগে চট্টগ্রামের জোবরায় প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানের সাফল্যের পর বড় করতে ইউনূস সাহেব বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে একটা প্রস্তাব দেয়। এতে তিনি (ইউনূস) সস্তায় কিছু লোন পাওয়ার প্রত্যাশা করেন।

অর্থমন্ত্রী জানান, তখন তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ডের সদস্য ছিলেন। ইউনূস সাহের প্রস্তাবে বোর্ডের তখনকার একজন ডেপুটি গভর্নর ও বোর্ড সদস্য পক্ষে থাকলেও অধিকাংশই ছিলেন বিপক্ষে।

মন্ত্রী জানান, সে সময়ে আমি কোনো পক্ষে ছিলাম না। পরে বোর্ডের সদস্য মাহফুজ সাহেব ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রামের ইউনূস সাহেবের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের পর বোর্ডের সবাইকে বুঝিয়ে তিন বছরের জন্য অনুমোদন নিয়ে দেন। তখন এর তেমন পরিচিতি ছিল না।

মুহিত বলেন, “পরে অধ্যাপক পিটার জলি বাংলাদেশে এসে গ্রামীণমুখী বিনিয়োগে আগ্রহী হন এবং ডক্টর ইউনূসের গ্রামীণ প্রকল্প-এ সন্তোষ প্রকাশ করেন। এভাবে গ্রামীণ ব্যাংক প্রথম টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ-এ যাত্রা শুরু করে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here