ডেস্ক রিপোর্ট:: ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় শামীম মিয়া (১৬) নামে এক অটোরিকশা চালককে হত্যার ঘটনায় ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শনিবার সন্ধ্যায় মুক্তাগাছা উপজেলার তারাটি চরপাড়া এলাকা থেকে ঘাতক রাকিবুল ইসলামকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়।

রোববার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীম হোসেন।

অভিযুক্ত রাকিবকে জিজ্ঞাসাবাদের বারত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, নিহত শামীমের একটি মোবাইল ফোন কেনার শখ ছিল। সেই বিষয়টি ভ্যানচালক রাকিবুুলের সঙ্গে আলাপ করায় ভাড়ায়চালিত অটোরিকশাটি বিক্রির পরিকল্পনা করে রাকিবুল। রাকিবুল নিজেও এনজিও থেকে আড়াই লাখ টাকা ঋণ নিয়ে চাপে থাকায় অটোরিকশাটি বিক্রি করে ভাগ করে নেওয়ার জন্য পরিকল্পনাটি করে। তারা জামালপুরের নরুন্দি এলাকায় গিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির কাছে ১০ হাজার টাকা অটোরিকশাটি বিক্রি করে দেয়। মালিককে বুঝানোর কথা ছিলো অটোরিকশাটি হারিয়ে গেছে। পরে অটো বিক্রির টাকা থেকে নিহত শামীম মাত্র ২ হাজার টাকা দেয় রাকিবকে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় শামীমকে কৌশলে ডেকে নিয়ে মুক্তাগাছা বিরাশি গ্রামের একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে যায় রাকিব।

তিনি আরও জানান, পরদিন শনিবার সকালে উদ্ধার করা হয় শামীম মিয়ার (১৬) মরদেহ। এ ঘটনায় ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) অভিযান চালিয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় ফকিরগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে শামীমের প্রতিবেশী শফিকুল ইসলামের ছেলে রাকিবুল ইসলামকে আটক করে। মুক্তাগাছা থানায় নিহতের বাবা সিরাজ মিয়ার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি রাকিবুল ইসলামকে রোববার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

নিহত শামীমের বাবা সিরাজ আলী জানায়, শামীম স্থানীয় একটি দাখিল মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করত। অভাবের কারণে পড়ালেখার পাশাপাশি অটোরিকশা চালাতো সে। সংসারে সহযোগিতা ও নিজের পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছিল অটোরিকশা চালিয়েই। গত শুক্রবার মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় দিনভর ভাড়ায় অটোরিকশা চালায় সে। বিকেলে বাবাকে ফোন করে জানায় ময়মনসিংহ সদরের কুষ্টিয়ায় বোনের বাড়িতে যাবে, রাতেই ফেরার কথা ছিল। কিন্তু পরদিন তার মরদেহ পাওয়া যায়। ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here