খোরশেদ আলম বাবুল।
শরীয়তপুর: শরীয়তপুরে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এ গড়ে উঠছেনা পর্যাপ্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান। যে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সে সকল উদ্যোক্তাদের লোকশান গুনতে হচ্ছে প্রতিদিন। প্লট বাতিল করার প্রক্রিয়া করেও সুফল হচ্ছেনা কর্তৃপক্ষের।
আপীল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ৩২টি প্লট। তালুকদার ফুট ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ পাচ্ছেনা সরকারী গম। বেসরকারী উপায়ে গম ক্রয় করে লোকশানের মুখে প্রতিষ্ঠানটি। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস বলে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
প্রায় ১৪ একর জমিতে শরীয়তপুর বিসিক শিল্প নগরীতে ২০০০ সাল থেকে পস্নট বরাদ্দ শুরু হয়। ৯৮টি পস্নট ৫৮টি ইউনিটে বরাদ্দ হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি ইউনিটে প্রিন্টিং প্রেস, আটা-ময়দা মিল, ডাল মিল, বিস্কুট বেকারী, আইসক্রীম ফ্যাক্টরী সহ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ৫টি ইউনিট উৎপাদন চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের। বিভিন্ন সময় এলএসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩২টি প্লট বরাদ্দ বাতিল করেন কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ৩১টি ইউনিট আপীল শর্তে বিভিন্ন মেয়াদে বরাদ্দ বহাল তবিয়তে রয়েছে। এমন তথ্য পাওয়া গেল শরীয়তপুর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন অফিস থেকে।
বিসিক শিল্পনগরীতে প্রতিষ্ঠিত তালুকদার ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ এ আটা-ময়দা-সুজি প্রস্তুত হয়। এর জন্য প্রয়োজন গম। সরকারী ভাবে গম পাচ্ছেনা এ মিলটি। তাই বে-সরকারী ভাবে গম নিতে হয় দেড় গুন টাকা দিয়ে। তাতে উৎপাদন ব্যয় অনেকগুন বেড়ে যায়। বর্তমানে সরকারী খাদ্য গুদাম থেকে ১৪ হাজার টাকা দরে মেট্রিকটন গম নেয়া যায়।
অথচ, শরীয়তপুর জেলার খাদ্য গুদাম থেকে ২ জেলা পার হয়ে গম চলে যায় ফরিদপুরে। রুগ্ন হয়ে পড়ছে শরীয়তপুরের ময়দা-আটার মিল। মিলটির প্রতিদিন ৪০-৬০ মেট্রিকটন গম মারাই করে আটা-ময়দা-সুজি তৈরী করতে পারে। জেলা খাদ্য অফিসের প্রক্রিয়ার সিস্টেম লছের কারনে এটা হচ্ছে না। এমন তথ্য দিলেন মেসার্স তালুকদার ফুড ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ এর জেনারেল ম্যানেজার এমএম রেজাউল হক।
মিল মালিক কামরুন্নাহার শেহেলী বলেন, যশোর, চট্টগ্রাম থেকে এলসি গম আনতে হয়। তাতে প্রায় ২৪ টাকা পরে যায় প্রতি কেজি আটার উৎপাদন খরচ। যে সকল মিল মালিকগন সরকারী গম পায় তাদের উৎপাদন খরচ হয় ১৬ টাকা তারা ১৭ টাকা দরে ওএমএস এর মাধ্যমে আটা বিক্রি করে। আমাদের আটার উৎপাদন খরচ পরে ২৪ টাকা তাই ক্রেতার কাছে আমার মিলের আটার চাহিদা নাই। আমি যত দ্রুত সম্ভব সরকারী গম বরাদ্দ চাই।
শরীয়তপুর জেলা খাদ্য অফিসের সহকারী উপ-খাদ্য পরিদর্শক গবিন্দ পাল বলেন, আমাদের জেলায় কোন আটা মিল না থাকায় ফরিদপুরের ডিলারগণ বিভাগীয় কার্যালয় থেকে ফরিদপুরে গম নেয়ার অনুমতি নিয়ে আসে। এখন শরীয়তপুরে মিল হয়েছে। সেই মিল মালিককেই আমরা গম দিব। তবে কোন প্রসেসে দিব তা আমাদেরও জানা নাই। বিভাগীয় অফিসের সাথে আলাপ করে জানতে পেরেছি একটা ফরমেট পূরন করে আবেদন করতে হবে। তাই ফরমের জন্য আবেদন করেছি। হয়তো আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবো।
বিসিক’র ভারপ্রাপ্ত উপ-ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, বিসিক এর প্রতিটি ইউনিটে শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু করতে মালিকদের চাপ প্রয়োগ করেছি। চেয়ারম্যানের নির্দেশে অনেকের প্লট বরাদ্দ বাতিল করা হয়। বিশেষ শর্তে চেয়ারম্যানের কাছ থেকে সময় আনছে সঠিক সময়ে শর্ত পূরন না করলে এবার ইউনিট বরাদ্দ বাতিল করা হবে।