মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ডষ্টাফ রিপোর্টার :: মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

এর ফলে মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকর করতে আইনগত কোনো বাধা থাকলো না। এখন শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ পাবেন জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত প্রভাবশালী এই নেতা।

আজ মঙ্গলবার (৩০ আগষ্ট) সকাল ৯ টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্য হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি বজলুর রহমান।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে মীর কাসেমের পক্ষে অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন- অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বৃন্দ। এ ছাড়া আদালতে বিপুলসংখ্যক আইনজীবী ও দেশি-বিদেশি মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ২৮ আগস্ট মীর কাসেমের রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। মীর কাসেমের পক্ষে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেন।

গত ১৯ জুন ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন দাখিল করেন মীর কাসেম আলী। মোট ৮৬ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ১৪টি যুক্তি দেখিয়ে ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস চাওয়া হয়। গত ৬ জুন মীর কাসেমের ২৪৪ পৃষ্ঠার ফাঁসির পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

গত ৮ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ ছয়জনকে নির্যাতন করে হত্যার দায়ে মীর কাসেমের ফাঁসির দণ্ড বহাল রেখে রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আপিল বিভাগের সপ্তম রায় এটি।

২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড থেকে বেকসুর খালাস চেয়ে আপিল করেন মীর কাসেমের আইনজীবীরা। আপিলে তার খালাসের পক্ষে ১৮১টি যুক্তি তুলে ধরা হয়।

২০১৪ সালের ২ নভেম্বর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আনীত ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধা জসিম ও জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে হত্যার দায়ে আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। এর মধ্যে ১২ নম্বর অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেওয়া হয়।

এ ছাড়া মীর কাসেম আলীকে ২ নম্বর অভিযোগে ২০ বছর, ৩, ৪, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগে সাত বছর করে এবং ১৪ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। অপরদিকে ১, ৫, ৮ ও ১৩ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here