ঢাকা: ফারাক্কা বাধের গেট খুলে দেয়ার প্রভাবে পাবনার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পানির দেখা মিলেছে পদ্মায়। প্রতিদিনই বাড়ছে পানির পরিমাণ। প্রতি তিন ঘন্টায় ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে এখানে।

Pabna52152গত ২৪ ঘন্টায় পানি বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার। এভাবে পানি বাড়লে বিপদসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। তবে পানি পরিমাপ বিভাগ বলছে, ফারাক্কায় পানি কমার কারণে বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা নেই বললে চলে। শনিবার বিকেল পর্যন্ত পাবনার পাকশী পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল পদ্মার পানি।

গতকাল শনিবার দুপুরে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে প্রবল স্রোত রয়েছে। পানি হার্ডিঞ্জ ব্রিজের প্রায় সবগুলো পিলার ছুঁয়েছে। যা বিগত বছরগুলোতে দেখা যায়নি। নদী পাড়ের কয়েকজন কৃষক ও মৎসজীবির সাথে কথা বললে তারা জানান, গত ১০-১২ বছরে পদ্মা নদীর পানি এত বাড়তে দেখেননি তারা। বিগত বছরগুলোতে এখানে পদ্মার পানি খালের মতো সরু নদীতে চলতো। দীর্ঘদিন পর ফারাক্কার বাধ খুলে দেয়ায় পানি সরু নদী ছেড়ে উপরে ওঠে মুল নদীর আকার ধারণ করেছে। তবে পানি বাড়ায় খুশি এ অঞ্চলের পদ্মাপাড়ের মানুষ। তারা বলছেন, ফারাক্কার বাধ খুলে রাখলে এভাবে পানি বেশি পাওয়া যাবে। যা দিয়ে এ অঞ্চলের মানুষ উপকৃত হবে। মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি চরের জমির উর্বরতা বাড়বে, ফসল ভাল হবে। নলকুপে পর্যাপ্ত পানি মিলবে। কৃষক, মৎসজীবি বাঁচবে।

পদ্মার পাকশী পয়েন্টে দায়িত্বরত গেজ রিডার আব্দুল হামিদ জানান, গত দশদিন আগে থেকে পানি বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই এখানে ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। প্রতি তিন ঘন্টা পর পর পানি পরিমাপ করা হচ্ছে। শনিবার সকাল ৬টায় পানির পরিমাণ করা হয় ১৪ দশমিক ১২ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় এ পরিমাণ ছিল ১৪ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় পানি বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার এবং বিকেল তিনটায় পরিমাপ করা হয় ১৪ দশমিক ১৯ সেন্টিমিটার। যা গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত শুক্রবার সকালে এই পয়েন্ট পানি পরিমাপ করা হয় ১৪ দশমিক ২ মিটার।

উত্তরাঞ্চলীয় পরিমাপ বিভাগ পাবনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম জহুরুল হক জানান, পাবনার পাকশী পয়েন্টে পদ্মার বিপদসীমা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। শনিবারের পরিমাপ অনুযায়ী পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যদি এভাবে পানি বাড়তে থাকে তাহলে আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে তিনি দাবি করেন, ফারাক্কায় বর্তমানে পানি কমতে শুরু করেছে। তাই পাবনার পাকশী পয়েন্টে পদ্মা নদীতে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা খুবই কম।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here