নিজস্ব প্রতিবেদক। ইউনাইটেড নিউজ ২৪.কম

tr-unঢাকা : প্রতিদিন বাড়তি অতিরিক্ত ৮০ হাজার যাত্রীসহ আড়াই লাখ যাত্রী বহনের টার্গেট নিয়ে আজ শুক্রবার থেকে ১৪টি বিশেষ আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস শুরু হচ্ছে। এ সার্ভিস ঈদের পরের সাত দিন (১৪ জুলাই অর্থাৎ চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল) পর্যন্ত চলবে।

তবে শিডিউল মেনেই সকল ট্রেন ছাড়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন,যাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌঁছাতে পারে, সে জন্য রেলের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকবেন।

রেলওয়ের ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেছেন, সবগুলো ট্রেনই যথাসময়ে স্টেশন ত্যাগ করবে। যাত্রী বা অন্য কোনো কারণে ১০ থেকে ১৫ মিনিট দেরি হতে পারে। প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন রুটের আন্তঃনগর ও বিভিন্ন লোকাল ও মেইল মিলে প্রতিদিন ৬৮টি ট্রেন ছেড়ে যাবে। যাত্রীরা যেন ভোগান্তির শিকার না হন সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

আজ শুক্রবার থেকে যেসব বিশেষ ট্রেন ছেড়ে সেসব বিশেষ ট্রেন সার্ভিসের মধ্যে দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল : ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ, চাঁদপুর স্পেশাল-১ : চ ট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম, চাঁদপুর স্পেশাল-২ : চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম, পার্বতীপুর স্পেশাল : পার্বতীপুর-ঢাকা-পার্বতীপুর, খুলনা স্পেশাল : খুলনা-ঢাকা-খুলনা রুটের ট্রেন রয়েছে।

এ ছাড়া কেবল মাত্র ঈদের দিন চলবে সোলাকিয়া স্পেশাল-১ : ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও সোলাকিয়া স্পেশাল-২ : ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ দুই জোড়া স্পেশাল ট্রেন সার্ভিস।

এ লক্ষ্যে গত ২২ জুন থেকে আসন্ন ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে রেলওয়ে এবং গত ২৭ জুন টিকিট বিক্রির মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে আগাম টিকিট বিক্রি।

শুক্রবার (১ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় কমলাপুর রেল স্টেশন পরিদর্শন করবেন রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। এ সময় তিনি ঘরমুখো মানুষদের সাথে কুশল বিনিময় করবেন।

আসন্ন ঈদে ঘরমুখো মানুষের স্বাচ্ছন্দ্য ভ্রমণ নিশ্চিত করতে সৈয়দপুর ও চট্টগ্রামের পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানায় রেকর্ডসংখ্যক যাত্রীবাহী ১৭০টি কোচ মেরামত হয়েছে। ঈদের আগে ও পরে পূর্ব ও পশ্চিম রেলে বাড়তি  ৮০ হাজার যাত্রী পরিবহন করার লক্ষ্য নিয়ে আন্তঃনগর ট্রেনের সঙ্গে অতিরিক্ত কোচ হিসেবে যুক্ত করা হবে। এসব কোচ ইতোমধ্যে রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের রুটে যেসব ট্রেন চলছে তার সঙ্গে ১৪টি বিশেষ ট্রেন যুক্ত হবে। এসব বিশেষ ট্রেনে ১৭০টি কোচের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে (পূর্বাঞ্চল) ৮৬টি এবং সৈয়দপুর রুটে (পশ্চিমাঞ্চল) ৮৪টি (এর মধ্যে ৩৮টি এমজি ও ৪৬টি বিজি) বগি যুক্ত হবে।

এ ছাড়া একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে দিনাজপুর যাওয়ার সময় অত্যধিক বিলম্বে  করলে পার্বতীপুর স্টেশনে টার্মিনেট করা হবে। যাত্রীদের ডেমু দিয়ে পার্বতীপুর-দিনাজপুর-পার্বতীপুর আনা নেয়া করা হবে।

পবিত্র ঈদ উপলক্ষে পূর্বাঞ্চলে ১২টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ৩১টি মোট ৪৩টি অতিরিক্ত লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) সরবরাহ করা হবে।

টিকিট কালোবাজারি রোধে ঢাকা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, খুলনাসহ সব স্টেশনে জিআরপি, আরএনবি,বিজিবি ও স্থানীয় পুলিশ এবং র‌্যাব সার্বক্ষণিক পাহারায় রাখার প্রস্তুতি রয়েছে।

নাশকতা প্রতিরোধে চলন্ত ট্রেনে, স্টেশনে বা রেললাইনে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে মোকাবেলায় আরএনবি, জিআরপি ও রেলওয়ের কর্মচারীদের কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, সারাদেশের মহাসড়কের নাজুক অবস্থা। সেই সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনা এবং অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে ট্রেনমুখী হয়ে উঠেছে যাত্রীরা। এই আগ্রহের কারণে ঈদে অধিকসংখ্যক যাত্রী বহনের বিষয়টি বিবেচনা করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ফলে ট্রেনমুখী অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের জন্য পুরনো যাত্রীবাহী কোস সচল করতে মেরামতের উদ্যোগ নেয় রেল কর্তৃপক্ষ। এসব কোস সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বিদেশ থেকে কোন কোস আমদানি করা হচ্ছে না। কারখানায় রাখা জরাজীর্ণ পুরনো কোসগুলো মেরামত করে সচল করা হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ব্রডগেজ ও মিটারগেজ উভয় ধরনের কোচ ও ওয়াগন মেরামতে রেলের প্রধান ভরসা সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ। তবে নানা সমস্যা জর্জরিত এ ওয়ার্কশপের কার্যক্ষমতা ক্রমেই কমছে। পুরনো যন্ত্রপাতি দিয়েই চলছে কোচ মেরামতের কাজ।

রেলমন্ত্রী মুজিবুল বলেন, রেলের সীমিত সম্পদের মধ্যেই ঈদের সময় দৈনিক আড়াই লাখ যাত্রী পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যান্য সময় দিনে ১ লাখ ৭০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হয়।

ঈদের সময় কালোবাজারি রোধ ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় রেলওয়ে পুলিশ, জিআরপিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করবে বলেও জানান মন্ত্রী।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here