সোহেল রানা,মৌলভীবাজার : প্রতারক চক্রের ফাঁদে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার নোয়াগাঁও ও খারপাড় গ্রামের ২৫ পরিবার। মধ্যপ্রাচ্যের ওমান নেয়ার কথা বলে ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার দক্ষিণ সাতরা গ্রামের নুর আলমের পুত্র আবুল কালাম হাতিয়ে নিয়েছে ২৫ পরিবারের প্রায় ৬০ লক্ষাধিক টাকা। ওই প্রতারকের শাস্তি দাবি করে প্রতারণার শিকার ২৫ জন পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার কুলাউড়ার ইউএনও ও থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার দক্ষিণ সাতরা গ্রামের আবুল কালাম (৩৫) কুলাউড়া উপজেলার খারপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের মেয়ে মিলি বেগমকে সম্প্রতি বিয়ে করে শ্বশুড়বাড়ীতে বসতি গড়েন। বিয়ের পর এলাকার লোকজনের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে প্রতারক কালাম। সেই সুযোগে নিজেকে একজন প্রবাসী এবং মধ্যপ্রাচ্যের ওমানে লোক পাঠানোর কথা বলে প্রচারণা চালায়। তার কথায় নোয়াগাঁ খারপাড় গ্রামের ২৫ পরিবার সরল বিশ্বাসে ওমান যাওয়ার জন্য প্রতারক আবুল কালামের হাতে তুলে দেন চুক্তি অনুযায়ী মোটা অংকের টাকা। সর্বনিন্ম ১লাখ ৫০ হাজার থেকে সর্বেচ্চ ২লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত তুলে দেন প্রতারক কালামের হাতে। ওই টাকা পরিশোধ করতে অনেকেই ধানী জমি বন্ধক আর গরু-ছাগল বিক্রি করে ওমান যাওয়ার জন্য টাকা দেন প্রতারক কামালের হাতে। ওমান যাওয়ার আসায় নোয়াগাঁও গ্রামের সৈয়দ মতিন মিয়া ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা নেয় কামাল। গত ১০ আগস্ট আবুল কালাম ওমান যাওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বুঝিয়ে দেয় সৈয়দ মতিন মিয়ার হাতে। তিনি গত ২২ আগস্ট পরিবার পরিজনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওমানে যাওয়ার জন্য হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে যান।
বিমান বন্দরের ভেতরে ইমিগ্রেশনে কাগজপত্র জমা দেয়ার পর তা প্রত্যাখ্যাত হয়। কাগজপত্র সব ভুয়া বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। এদিকে বিমান বন্দর থেকে ফিরে বাড়িতে এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ভিসাদাতা আবুল কালাম এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করেছে। এলাকায় বিষয়টি জানাজানি হলে এভাবে একে একে আরও ২৫ পরিবারের সদস্য প্রতারক আবুল কামালের খপ্পড়ে পড়ে প্রতারিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রতারিত ২৫ পরিবারের সদস্যরা প্রতারক আবুল কালামের শাস্তি ও টাকা উদ্ধার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কুলাউড়ার ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদন করেন। একই সঙ্গে আবুল কালামের নামে থাকা ভাটেরা ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করার জন্য ভাটেরা পূবালী ব্যাংকেও আবেদন করেন।
এব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাজমুল হাসান জানান,বর্তমানে তার ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করার জন্য ব্যাংকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।