71068_Flood-2মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল,নোয়াখালী : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় কোমেনের প্রভাবে নোয়খালীতে ঝড়ো হাওয়ার সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। হাতিয়ার নলচিরা ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত জোয়ারের পানিতে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যে  জেলার প্রায় ২৫হাজার  লোককে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে নোয়াখালী  অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) অনুপম বড়ুয়ার সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ঘূর্ণিঝড়  কোমেন এর পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে করনীয় শীর্ষক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুপম বড়ুয়া জানান, জেলায় ২৩০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ১১৪টি মেডিকেল টিম ও সাড়ে পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক যানবাহন ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে  জেলার  কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহি, চরফকিরা, মুছাপুর ইউনিয়ন, কবিরহাট উপজেলার  ঘোষবাগ, ধানশালিক, ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন, সূবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর, চরবাটা, চরক্লার্ক, চরওয়াপদা, চরজুবলী, আমানউল্যাহ, পূর্ব চরবাটা, মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন এবং হাতিয়া উপজেলার সবগুলো ইউনিয়ন ঝুঁকিতে রয়েছে। ইতিমধ্যে এসব উপজেলা গুলোতে ঘূর্ণিঝড়ের পরবর্তী সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়ার জন্য  কোম্পানীগঞ্জে ৩৩টি আশ্রয় কেন্দ্র, ১৩টি  মেডিকেলটিম, কবিরহাটে ২২টি আশ্রয়কেন্দ্র, ১২টি  মেডিকেলটিম, সূবর্ণচরে ৯৪টি আশ্রয় কেন্দ্র, ৭টি  মেডিকেলটিম, হাতিয়া ১৫৩টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৪টি  মেডিকেলটিম প্রস্তত রয়েছে। এছাড়াও উপজেলা গুলোর সকল সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয় গুলো প্রয়োজনে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. ইলিয়াছ শরীফ জানান, জেলা পুলিশের একশ জনের একটি টিম উদ্ধার তৎপরতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক যানবাহন নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে।

সকাল থেকে হাতিয়া, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলার বিভিন্ন দ্বীপ ও দুর্গম চরের লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসতে শুরম্ন করেছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির স্বেচ্ছাসেবকরা সাইরেন বাজিয়ে ও প্রচার মাইকে সতর্ক বার্তা প্রচার করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন স্থানে লোকজনকে সতর্ক করে তিনটি লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) আবু হাসনাত মো. মাইন উদ্দিন জানান, নিঝুমদ্বীপসহ বেড়ি ও বেড়ির পাশের লোকজন আশ্রয় সরিয়ে আনা হয়েছে।

সুবর্ণচর উপজেলার ইউএনও মো. হারুনুর রশিদ জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আহমেদ কবির ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি মনিটরে করতে সুবর্ণচরে অবস্থান করছেন।

কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আশরাফুর রহমান জানান, চর এলাহী, চর ফকিরা সহ দুর্গম চর ও দ্বীপের লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here