কলাপাড়ামিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :: পূর্নিমার জো ও ভারি বর্ষনের প্রভাবে আন্ধারমানিক নদীর পানির তোড়ে কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ৪৭/৪ পোল্ডারের দৌলতপুর স্লুইসসহ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। এ কারনে নয়টি গ্রাম পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে দৌলতপুর গ্রামের সড়ক যোগাযোগ।

ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করায় দৌলতপুর, দৰিন দৌলতপুর, পূর্ব দৌলতপুর, খলিলপুর, আমিরাবাদ, মোহনপুর, তাহেরপুর, মোহাম্মদপুর, মোস্তফাপুর ও গৈয়াতলা গ্রামের প্রায় চার শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানির তোড়ে কয়েক’শ একর জমির আমনের বীজতলা ভেসে গেছে। গত দু’দিন আগে গৈয়াতলা সৱুইসসহ বাঁধ বিধ্বস্ত হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ রৰায় কোন উদ্যেগ নেয়নি।

এদিকে লালুয়ার চাড়িপাড়া,নাওয়াপাড়া ও মহীপুরের নিজামপুর ভাঙ্গা বাঁধের অংশদিয়ে পানি প্রবেশ করায় দুই ইউনিয়নের ১৫ টি গ্রাম আবারও তলিয়ে গেছে। ৪/৫ ফুট পানি বেড়ে যাওয়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অন্তত ১০ হাজার মানুষ। প্রায় তিন হাজার একর জমিতে আমন চাষাবাদ বন্ধ রয়েছে। প্রচন্ড পানির তোড়ে প্রায় দুইশ পরিবার বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান।

গৈয়াতলা গ্রামের গৃহবধু মোসাঃ সুরাইয়া বলেন, দুইদিন আগে রাতে সেহরী তৈরি করার সময় হুনি বিকট শব্দ। রাইতে অন্য বাসার মানুষও এই শব্দ হোনছে। মানুষ রাইতেই বাইর হইয়া দ্যাহে সৱুইস ভাইঙ্গা পড়ছে। বড় বড় চাঙ্গইল লইয়াবান্দের মাটি ভাইঙ্গা পড়েছে। সৱুইস ভাইঙ্গা পড়ার পরই আমাগো গ্রাম পানিতে তলাইয়াযায়।

নীলগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আঃ মালেক খান জানান, এখন গোটা এলাকাই পানিবন্দী। অবস্থা এমন হয়েছে যে কোথায় মাঠ, কোথায় খাল-পুকুর তা বলা সম্ভব হচ্ছে না। জরুরী ভিত্তিতে গৈয়াতলা স্লুইসসহ বাঁধ মেরামত না করলে এ মেীসুমে মানুষের দূর্ভোগের আর শেষ থাকবে না।

লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মীর তারিকুজ্জমান তারা জানান, পানি বৃদ্ধির কারনে অন্তত দেড়শ পরিবার বিভিন্ন বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছে। নাওয়াপাড়া গ্রামের সৱুইস ভেঙ্গে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। গত ছয় বছর ধরে লালুয়ার মানুষ দূর্ভোগ পোহালেও এখনও চাড়িপাড়া বাঁধ মেরামত হয়নি। এ কারনে প্রতিদিনই গৃহহারা হচ্ছে মানুষ।

মহীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আঃ সালাম আকন জানান, নিজামপুর বাঁধ প্রতিদিনই ভাঙ্গছে। জোয়ার হলেই বাঁধের অভ্যন্তরে পানি প্রবেশ করছে। তবে এ বার পূর্নিমার জো’তে পানি উচ্চতা আরও বেড়ে যাওয়ায় দূর্ভোগে পড়েছে পাঁচটি গ্রামের মানুষ।

কলাপাড়া পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল খায়ের জানান, বর্তমানে ভারি বর্ষন অব্যাহত থাকায় ভাঙ্গা বাঁধ কিংবা সৱুইস মেরামত করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাঁরা ৰয়ৰতি নির্ধারন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছেন। বরাদ্ধ হলে জরুরী ভিত্তিতে বাঁধ ও স্লুইস নির্মান করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here