কেশবপুর(যশোর) : কেশবপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জিম্মী করে স্লিপ প্রকল্পের আওতায় ডিজিটলি উপকরণ সরবরাহের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকরা চাকুরীর ভয়ে টু শব্দটি করতে পারছেন না।

জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার ১৫৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি স্লিপ প্রকল্পের আওতায় ৩০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ পেয়েছে। এ বরাদ্দের ভিতর থেকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান ডিজিটাল ফেষ্টুন ও ছবি সরবরাহের নামে প্রত্যেকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৭ হাজার টাকা করে মোট ১১ লাখ ৬ হাজার টাকা নিজ কব্জায় নিয়েছেন। ডিজিটাল উপকরণের নামে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা মুল্যের বিভিন্ন রকম ফেষ্টুন ও ছবি বিতরণ করে পুরো টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যার বদৌলতে তিনি কামিয়াব হয়েছেন প্রায় ৬ লাখেরও বেশি টাকা। ডিজিটাল উপকণের ভিতর বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম, সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী এ এস এইচ কে সাদেকসহ, ১২টি ডিজিটাল পোষ্টার। যার সর্ব সাকুল্যে খরচ দাঁড়ায় ৩ হাজার টাকার উপরে নয়। প্রতি ইউনিয়নের দু’জন করে মনোনীত শিক্ষককে এ টাকা কালেকশনের দায়িত্ব দেন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। এলাই বক্স নামে এক ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জানান, তার বিদ্যালয় থেকে ৭ হাজার টাকা কেটে নেয়া হয়েছে। এ দিকে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গত ২৯ জুন সোমবার তার কার্যালয়ে উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের তার মনোনিত টাকা কালেকশনে দায়িত্ব পালনকারী ২ জন করে শিক্ষকদের নিয়ে গোপন মিটিং করেছেন।  অভিযোগকারী সন্দেভাজন শিক্ষকদের কঠোর হস্তে দমন করবেন বলেও ঘোষনা দিয়েছেন। এব্যপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমানের সাথে সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উন্নত মানের পোষ্টার সরবরাহ করা হয়েছে, টাকা নেয়ার বিষয়টি সত্য নয়। অপরদিকে ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষকরা নাম না প্রকাশের শর্তে জানিয়েছেন, তিনি ডিজিটাল উপকরণ ক্রয়ের নামে ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে যে সকল উপকরণ সরবরাহ করেছেন তার মূল্য সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকার বেশী হবে না। এ ছাড়া কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো সংস্কারের এক লাখ টাকা করে বরাদ্দ হওয়া টাকা থেকে ৩০ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হলে বেরিয়ে আসবে শিক্ষা কর্মকর্তার দূর্নীতির কাহিনী। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের নিকট থেকে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা নেওয়া না দিলে অফিসে ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রাখাসহ নানামুখি হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। অপর একটি সুত্রে জানা গেছে তিনি দেশের ভিতরে দূর্নীতিবাজ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত ৮ জনের একজন। তাঁর দূর্নীতির কারণে কোন উপজেলায় তিনি ১ বছরের বেশী কাটাননি। এব্যপারে সচেতনমহলসহ ভুক্তভোগি শিক্ষকরা নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন ।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here