গত ৫ জানুয়ারি থেকে দেশে যা ঘটছে তা নিয়ে মনে হচ্ছে আমাদের নেতা নেত্রিদের কোনই মাথা ব্যাথা নেই। আমার এই কথা শুনে অনেক লীগ অথবা দল সমর্থকই হা রে রে করে ছুটে এসে আমাকে নানা ভাবে বুঝাতে চাইবে তার সমর্থিত পার্টি কতটা উদ্বিগ্ন এই বর্তমান অবস্থা নিয়ে।
গত কয়েক দিনে দেখলাম বেশ কটা চ্যাট সাইট ব্যান করা হয়ছে। এমন একটা ব্যপার যেন যত নষ্টের গোড়া ঐ ভয়েস চ্যাট সাইট। এটা বন্ধ করলে সব ঠিক হয়ে যাবে? যখন চ্যাট সাইট ছিল না তখন সন্ত্রাসীরা যোগাযোগ করতো না? চ্যাট সাইট যোগাযোগ করে বাসে বোমা মারছে! সত্যিকারের কোন কাজ করছেই না । অকারণ গলাবাজি। যা হোক মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি।
এই যেমন নানা টক শো এর বক্তারা সমানে বকে বকে আর নানা রাজনৈতিক দলের নেতারা বিভিন্ন সভা অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়ে দিয়ে কুমির অশ্রু বিসর্জন করে আহা উহু করে আমাদের এটাই বুঝাতে চাইছেন তার দল কতটা নিষ্পাপ। এই অবস্থার জন্য তারা মোটেই দায়ি নয় । আমি বলি ভাইজান, আপামনি দয়াকরে থামেন। আমরা আম জনতা । এই দিক গেলেও কাটে ঐ দিক গেলেও কাটে । আমরা ভুক্তভুগী। আমরা কতটা ভুগছি সেটা আমাদের বুঝাতে আসবেন না।
আমরা যে অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছি তার বিন্দু মাত্র ধারণা থাকলে আপনারা গলাবাজি করতে পারতেন না। অন্তত চোখের লজ্জাতেই পারতেন না। যদিও আপনাদের লজ্জাবোধ আছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
সমানে মানুষ মরছে, গরিব মানুষ, সাধারণ মানুষ। তাই কোন দলের কারুই কিছু গায়ে লাগছেনা। টক শো গুলো জমজমাট এই চ্যানেল থেকে ঐ চ্যানেল । টি ভি চ্যানেল গুলোর টি.আর.পি বাড়ছে। সমস্যা কি? আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী (!!) বাহিনীর প্রধানরা হুমকি টুমকি দিচ্ছে। ভালইতো।
সাধারণ মানুষ প্রান হাতে নিয়ে ঘর থেকে বেরুচ্ছে। বেরুবেইতো। কারণ এরা সাধারন মানুষ। কতটা নৃশংস হলে জেনে বুঝে যাত্রীবাহী বাস বা টেম্পো তে আগুন দেয়া যায়? এক টেম্পো চালক কে তার টেম্পোর দরজা বন্ধ করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়ছে। এটা তো ঠাণ্ডা মাথায় খুন। ইডেন কলেজের দুই ছাত্রী আগুনে দগ্ধ হল। তাদের অপরাধ কি? তারা ফর্ম ফিলাপ করতে কলেজে গিয়েছিল, এটা? নাকি ওরা এই দেশের সাধারন নাগরিক সাধারন বাবা মায়ের সন্তান কোন এলিটের সন্তান নয় সেটা?
কিন্তু আমাদের এলিটদের কিছু যায় আসে না। এরা মঞ্চে দাঁড়িয়ে এ তাকে, সে একে নান কথা বলছে । রাজনৈতিক শিষ্টাচার এর তোয়াক্কা না করে যা তা বলছে। একে অন্য কে দোষারোপ করছে। রাজনীতির মাঠ গরম করছে। উস্কানি দিচ্ছে। কিন্তু কেউ দায় নিচ্ছে না। উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে সমাধানের কথা বলছে না। সমাধানের কোন ইচ্ছেও দেখছি না।
সাধারন মানুষ মরলে তাদের কিছু এসে যায় না! তাদেরতো আপনজন মরছে না। তাদের আপনজনরা তো আরামে সবরকম সুযোগ সুবিধা নিয়ে নিরাপদেই আছে। তাহলে তাদের গায়ে লাগবে কেন? তাদের এই নোংরা রাজনীতির স্বীকার হয় সাধারন মানুষ।
মরছে মানুষ মরুক, পুড়ছে মানুষ পুড়ুক, কাঁদছে মানুষ কাঁদুক। রাজনৈতিক নেতাদের কিচ্ছু আসে যায় না। কারন ক্ষমতাই আসল, ক্ষমতাই সর্বময়। ক্ষমতার বলি হোক এই দেশের সাধারন নিরীহ মানুষ । আমাদের সম্মানিত নেতা নেত্রি গন আপনারা নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভেতরে থেকে কুমিরের অশ্রু বিসর্জন করুন।
আরও উস্কানি দিন আর মানুষ মরুক । যতো লাশ তত ক্ষমতা পোক্ত হবার সম্ভাবনা । এই রাজনীতির মুখে থু থু থু । এই রাজনৈতিকদের মুখে থু থু থু যারা জনগনের কথা বলে, জনগনের লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় বসে!
লেখক: haider_nusrat@yahoo.com