স্পোর্টস ডেস্ক :: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিজ্ঞতা ১০ বছরের। ওয়ানডের হিসাব ধরলে পূর্বসূরি-সতীর্থ-উত্তরসূরি মিলিয়ে তার চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন কেবল একজন। তাঁর চেয়ে বেশি উইকেট নেননি কেউ। ছিলেন সর্বশেষ দুটি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে।
অথচ আরেকটি বিশ্বকাপ যখন দরজায় কড়া নাড়ছে, সেই আবদুর রাজ্জাক যেন বিস্মৃত এক নাম। ৩০ জনের প্রাথমিক স্কোয়াডে থাকলেও চূড়ান্ত ১৫ জনে যাঁর থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
বিকল্প হিসেবে যে তিনজন, তাঁদের সম্মিলিত অভিজ্ঞতাও এক বছরের না। ওই ত্রয়ী সাকুল্যে ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন ১১টি, রাজ্জাকের একার চেয়ে যা মাত্র (!) ১৪২ ম্যাচ কম।
তিনজন মিলে যেখানে নিয়েছেন ২৪ উইকেট, সেখানে খুলনার ওই বাঁহাতি স্পিনারের শিকার এর চেয়ে ১৮৩টি বেশি। এর পরও সাকিব আল হাসানের স্পিনসতীর্থ হিসেবে আরাফাত সানি, জুবায়ের হোসেন ও তাইজুল ইসলামের নাম উড়ে বেড়াচ্ছে প্রবলভাবে। রাজ্জাকের বিশ্বকাপ সম্ভাবনার প্রদীপটা সেখানে জ্বলছে টিমটিমিয়ে।
তার বিপক্ষে অনেক অভিযোগ! বুড়িয়ে গেছেন, ফিটনেস ভালো না, ফিল্ডিং যাচ্ছেতাই, বোলিংয়ে আগের ধার নেই। রাজ্জাক জানেন তা। তাই বলে হাল ছেড়ে দেওয়ার পাত্র তিনি নন, ‘এত বছর জাতীয় দলে খেলার পর যদি এমনটা শুনি, কষ্ট লাগে খুব। আমার ফিটনেস এখনো অত খারাপ হয়নি যে কারণে জাতীয় দলে খেলতে পারব না।’
জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রস্তুতিতে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়ার পর এখন আবার পূর্ণ সুস্থ বলে দাবি তার। বিশ্বকাপ খেলার দাবি জানাচ্ছেন প্রিমিয়ার লিগে কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের হয়ে ৯ ম্যাচে ১৪.৫৭ গড়ে ২১ উইকেট নিয়ে।
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের টিকিট পাওয়ার আশা তাই ছাড়ছেন না রাজ্জাক, ‘আশা নিয়েই তো মানুষ বেঁচে থাকে। আমিও আশায় আছি, বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাব।’
বছরখানেক আগেও জাতীয় দলের একাদশে অপরিহার্য ছিলেন। সেই তিনি অপাঙ্ক্তেয় হয়ে উঠেছেন ফর্মে ভাটার টান পড়ায়। ২০১৩ সালে ৯ ওয়ানডেতে ৯ উইকেট তার সামর্থ্যের প্রতিফলক না। আর এ বছর ছয় ওয়ানডেতে ১১২.৩৩ গড়ে মাত্র তিন উইকেট নিয়ে ছিটকে পড়েছেন দল থেকে।
ব্যাপারটি মানতে কষ্ট হয় রাজ্জাকের, ‘এর আগে আমার ফর্ম নিয়ে কখনো প্রশ্ন উঠেছে? ওঠেনি। তো এত বছর খেলার পর ক্রিকেটের নিয়মেই তো ফর্মের কিছু উত্থান-পতন হতে পারে। তার মানে এই নয় যে, একটা-দুটো সিরিজ কিংবা এক বছর খারাপ খেলার কারণে আমি বাতিল হয়ে গেলাম।’
বিশ্বকাপে সুযোগ পেলে পারফর্ম করার প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন তিনি, ‘আমি যদি বলি অভিজ্ঞতার মূল্য আছে, তাহলে মনে হবে নিজের জন্য সুপারিশ করছি। শুধু এটুকু বলতে পারি, অনেক বছর ধরে অনেক অনেক ম্যাচ খেললে যা শেখা যায়, সেটি কোনো কোচ আপনাকে শেখাতে পারবে না। আর বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পেলে সেখানে শুধু আমি অভিজ্ঞতা কাজে লাগাব না। পারফর্মও করব।’
আর যদি সুযোগ না পান? তবু জাতীয় দলের জার্সি তুলে রাখার কোনো চিন্তাভাবনা নেই বলে জানালেন রাজ্জাক, ‘বিশ্বকাপে না খেললে আমার জন্য সব শেষ হয়ে যাবে না। অবসর নেওয়ার কথা তাই মোটেই ভাবছি না। কারণ জাতীয় দলকে এখনো আমার দেওয়ার আছে অনেক।