sakibস্পোর্টস ডেস্ক :: মুশফিকুর রহিমের ক্রিজে নামা মানেই রানের নিশ্চয়তা। সাকিব আল হাসানের মাঠের পারফরম্যান্স বরাবরই প্রশ্নাতীত। ব্যর্থতার চোরাগলি থেকে আবার রানের রাজপথে মাহমুদ উল্লাহ।

 

অভিষেকে উজ্জ্বল সাব্বির রহমান। ওদিকে থেমে নেই নাসির হোসেনের প্রত্যাবর্তন প্রচেষ্টা। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মিডল-অর্ডার তো নয়, এ যেন আলোয় ভরা আকাশ!

 

বিশ্বকাপের প্রাথমিক স্কোয়াডের মিডল-অর্ডার নিয়েই সম্ভবত সবচেয়ে নির্ভার নির্বাচকরা। সেটি ব্যাটসম্যানদের ফর্মের কারণে যেমন, তেমনি স্কোয়াডের ভারসাম্যের জন্যও।

 

ছোটখাটো দু-একটি সিদ্ধান্ত হয়তো নেওয়ার বাকি। ১৫ জনের স্কোয়াডে একটি জায়গা নিজের করে নেওয়ার সুযোগ হয়তোবা আছে এখনো। বিশেষত লোয়ার মিডল-অর্ডারে। ব্যাটিং-অর্ডারের এই মেরুদণ্ড মিডল-অর্ডারে সবচেয়ে আস্থার নাম মুশফিকুর।

 

দলের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁর নামে কারো আপত্তি থাকলেও থাকতে পারে। সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হিসেবে একেবারেই না। বিশ্বকাপের আবহে দুশ্চিন্তাটা অবশ্য অন্যত্র। ব্যাটিং-অর্ডারে মুশফিকের পজিশন।

 

দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ৬ নম্বরে খেললে হয় কিভাবে! ওয়ানডেতে ৪ নম্বরটা নিজের করে নিয়েছিলেন মুশফিক। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে কী যে হলো, দুটো ম্যাচে নামলেন পাঁচে।

 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে ৪ ও ৫ নম্বরে নেমেছেন একটি করে খেলায়, বাকি তিন ম্যাচে ৬ নম্বরে। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে এমন ব্যাটসম্যানকে ৬ নম্বরে নামিয়ে অপচয়টা করেই যাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট।

 

মুশফিকের ফর্ম নিয়ে অবশ্য দুশ্চিন্তা নেই। এ বছর ওয়ানডেতে ১৮ ম্যাচে ৭০৪ রান করেছেন একটি সেঞ্চুরি ও ছয় হাফসেঞ্চুরির মালায়। ওয়ানডে অধিনায়কত্ব হারানোর ঠিক পরের সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হয়েছেন ম্যান অব দ্য সিরিজ।

 

যদিও প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম দোলেশ্বরের জার্সিতে চার ম্যাচে ১৬০ রানের বেশি করতে পারেননি। সাকিবও প্রিমিয়ার লিগে আলো ছড়াতে পারছেন না তত। চার ম্যাচে ১১৭ রান সে সাক্ষ্য দেয়।

 

তবে নিষেধাজ্ঞার আগে-পরে জাতীয় দলে যথারীতি উজ্জ্বল তিনি। ১২ ওয়ানডেতে ২৮৯ রান একটি করে সেঞ্চুরি-হাফসেঞ্চুরিতে। ব্যাটিং-অর্ডারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক ম্যাচে পরিস্থিতির দাবি মেটাতে সাকিব তিনে নেমেছেন বটে, তবে এমনিতে থিতু ৫ নম্বরে।

 

মাহমুদ উল্লাহর সঙ্গে মুশফিকের পজিশনের অদল-বদলের চিন্তার ধারা এখন প্রবাহিত বাংলাদেশের থিংক ট্যাংকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচে চারে নেমে অপরাজিত ফিফটি করে মাহমুদ সে ভাবনার পালে লাগাচ্ছেন জোর হাওয়া।

 

এ বছর ১৬ ওয়ানডেতে তিনি করেছেন ২৯৪ রান। ওদিকে প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে চার ম্যাচে ১০৫ রান মাহমুদের। পজিশনের ওলট-পালট হতে পারে, তবে বিশ্বকাপে ব্যাটিং-অর্ডারের চার-পাঁচ-ছয়ে থাকছেন এ তিনজনই। ৭ নম্বর পজিশনটি নিয়ে জোর লড়াই সাব্বির ও নাসিরের।

 

বর্তমান বিবেচনায় অভিজ্ঞকে ছাড়িয়ে একটু হলেও এগিয়ে তারুণ্য। এ বছর ১৩ ওয়ানডে কোনো ফিফটি ছাড়া ২২৫ রান করার পর জাতীয় দল থেকে ছিটকে গেছেন নাসির। ফেরার লড়াইয়ে এরপর প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর জার্সিতে ১১ ম্যাচে করেছেন ২৬৯ রান।

 

ওদিকে নাসিরের জায়গায় সুযোগ পেয়ে জাতীয় দলে অভিষেকেই সাব্বির খেলেছিলেন ২৫ বলে অপরাজিত ৪৪ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। প্রিমিয়ার লিগেও উজ্জ্বল তিনি।

 

নাসিরের চেয়ে পাঁচ ম্যাচ কম খেলে তাঁর রান মাত্র ২২ কম। তবে শেষ পর্যন্ত ১৫ জনের স্কোয়াডে এ দুজনেরই থাকাটা অসম্ভব নয়। তবে অবাক হতে হবে, যদি প্রাথমিক স্কোয়াডে থাকা মিডল-অর্ডারের অন্য দুজন নাঈম ইসলাম ও শুভাগত হোম পান বিশ্বকাপের টিকিট।

 

২০১১ সালের পর আর ওয়ানডে খেলেননি শুভাগত। প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংকের হয়ে তাঁর আট ম্যাচে ২১৬ রানও অমন নজরকাড়া না। নাঈম অবশ্য লিগে ভালো খেলেছেন যথেষ্ট। মোহামেডানের জার্সিতে ১১ ম্যাচে পাঁচ হাফসেঞ্চুরিতে তাঁর রান ৪১১। তবু সেটি কি আর বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ডাক পাওয়ার মতো? মিডল-অর্ডারের আলোয় ভরা আকাশের কোনো তারা ছিটকে দেওয়ার মতো পারফরম্যান্স যে তাঁদের না!

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here