যুদ্ধাপরাধের বিচার হওয়া উচিত সুষ্ঠু ও স্বচ্ছবাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক থেকে: যুদ্ধাপরাধের বিচার সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে হওয়া উচিত। একই সঙ্গে তা হওয়া উচিত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে। ইন্টারন্যাশনাল কোভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস সহ আন্তর্জাতিক যেসব চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ তা অনুসরণ করা উচিত বাংলাদেশের।

জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ফাঁসির রায় দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ফের এমন মন্তব্য করেছে। এর আগেও তারা এ বিচারে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

২৯শে অক্টোবর নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ওই সব কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেন পসাকি। এতে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব সংলাপের প্রসঙ্গও উঠে আসে। প্রশ্নের জবাবে জেন পসাকি বলেন, ওই ব্রিফিংয়ের সময় চলছিল ওই সংলাপ। তিনি এ বিষয়ে পরে সাংবাদিকদের অবহিত করার কথা বলেছেন।

ব্রিফিংয়ে যুদ্ধাপরাধ নিয়ে প্রশ্নোত্তর এখানে তুলে ধরা হলো:

প্রশ্ন: বাংলাদেশের একটি আদালত ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইসলামপন্থি একজন নেতাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বুধবার। ওই দিনই এই রায়ের প্রতিবাদে তার কিছু সমর্থক প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছে। আগেই এ বিচার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কি মনে করে যে, এই বিচার অত্যন্ত স্বচ্ছ নয়? বাংলাদেশে কয়েক দশক ধরে এ বিচার নিয়ে উত্তেজনা চলছে। এ বিচারের মাধ্যমে সেই উত্তেজনা কি কমানো হয়েছে? যুক্তরাষ্ট্র কি বিশ্বাস করে যে, এই বিচার অবাধ ও স্বচ্ছ হয়েছে এবং আরও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে কোন উদ্বেগ আছে?

উত্তর: ভাল কথা। প্রথমেই আমি বলতে চাই যে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রথম রায়ের সময় থেকেই আমরা বলে আসছি- ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা নৃশংসতা ঘটিয়েছিল তাদের বিচার সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে, বাংলাদেশের ইতিহাসে যে বেদনাদায়ক অধ্যায় রয়েছে তা থেকে পরিত্রাণের জন্য এই বিচারের গুরুত্ব আমরা বুঝতে পারি। আমরা আরও বিশ্বাস করি যে, এই বিচার হওয়া উচিত অবাধ ও স্বচ্ছ। ইন্টারন্যাশনাল কোভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস সহ আন্তর্জাতিক অনেক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। ওই চুক্তিগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশ এর মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে এ সব বিচার হওয়া উচিত। অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ স্টিফেন র‌্যাপ বলেছেন, যে সব দেশ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেবে তাদেরকে অবশ্যই যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, মানদণ্ডকে সবার ঊর্ধ্বে তুলে ধরে, অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তা করতে হবে। একই সঙ্গে সুষ্ঠু বিচারের নিশ্চয়তার প্রতি দেখাতে হবে শ্রদ্ধা। সেই কথাগুলো আপনাদের কাছে তুলে ধরা ছাড়া এই বিচারের মূল্যায়ন করার মতো অবস্থানে আমি নেই। আমরা প্রত্যাশা করি ওই মূল্যায়ন ও মানদণ্ড অনুসরণ করা হবে।

প্রশ্ন: এ রায়কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সমাজ খুব বেশি বিভক্ত। এ কারণে আরও সহিংসতার আশঙ্কা সম্পর্কে কি বলবেন? রাজধানীর বাইরে অন্য শহরের রাস্তায় আরও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়বে?

উত্তর: এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের টিমের সঙ্গে কথা বলি নি। এ নিয়ে পূর্বাভাস সম্পর্কেও আমি শুনি নি কিছু। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলবো এবং দেখবো আরও কোন তথ্য আনতে পারি কিনা।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here