ইউনাইটেড নিউজ ডেস্ক : ককটেল উদ্ধার, বাসে আগুন, গ্রেফতার ও বিক্ষোভ মিছিলের মধ্য দিয়ে জামায়াতের ডাকা প্রথম দিনের হরতালের ১২ ঘণ্টা ঢিলেঢালাভাবে পার হয়েছে। এ ছাড়া তেমন কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারা দিনে রাজধানীতে ঘুরে হরতালের এমন চিত্রই চোখে পড়েছে।
পুলিশ ও জামায়াত সূত্রে জানা যায়, হরতাল শুরুর প্রাক্কালে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, চকবাজার, সূত্রাপুর, বংশাল, কোতোয়ালি, খিলগাঁও, রামপুরা, বাড্ডা, মিরপুর, দারুস সালাম, তেজগাঁও ও মগবাজারে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
যাত্রাবাড়ীর চাইনিজ এলাকায় ফুটপাতের ওপর বসানো দোকানপাটে হরতালকারীরা পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরাতে চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। খিলগাঁও এলাকাতেও রাস্তায় আগুন দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াত কর্মীরা। এ ছাড়া আর কোথাও কোনো নাশকতার খবর পাওয়া যায়নি।
সকালের দিকে মিরপুরে মনিপুর এলাকায় একটি ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে সাত শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মিরপুর থানার ওসি সালাউদ্দিন খান জানান, ওই ছাত্রাবাসের শিবির কর্মীরা হরতালে নাশকতা চালানোর উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠক করছিল। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দারুস সালাম এলাকা থেকে মিছিল বের করার চেষ্টাকালে ছয় শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ছাড়া উত্তরা থেকে পাঁচজন ও লালবাগ থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিকেলের দিকে হাজারীবাগ এলাকায় একটি বাড়ির সামনে থেকে আটটি ককটেল উদ্ধার করেছে র্যাব-২। পরে র্যাব অবিস্ফোরিত ককটেলগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।এ সময় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি র্যাব।
বৃহস্পতিবার হরতাল চলাকালে কদমতলী থানার শ্যামপুর এলাকায় বোরাক পরিবহণের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় জামায়াত-শিবির কর্মীরা। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। এতে কেউ হতাহত বা গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, অগ্নিসংযোগকারীদের ধরতে অভিযান চলছে।
সারা দিনের হরতাল শেষে জামায়াতের ঢাকা মহানগর শাখার প্রচার সম্পাদক জাকের হোসাইন বলেন, হরতাল সফল হয়েছে। রাস্তায় গাড়ি চলেনি। জীবনযাত্রা থেমে গেছে। সরকারের হুঁশ হলে অবিলম্বে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দেবে।
তিনি জামায়াতের আমির নিজামীর সাজা বাতিল করার দাবি জানান। এ ব্যাপারে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া জামায়াতের ডাকা প্রথম দিনের হরতালে তেমন কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতির কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এটুকুও না ঘটে সে ব্যাপারে পুলিশ আরো কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া রাস্তায় প্রাইভেট গাড়ি কম থাকলেও গণপরিবহণ স্বাভাবিক ছিল বলে জানান তিনি।